ক্ষতিগ্রস্ত: খানাকুলের ধান্যগোড়ি জেলেপাড়ার বাঁধের হাল। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
দু’দিন ধরে নিম্নচাপের বৃষ্টি হলেও আরামবাগ মহকুমার নদনদী এখনও ভরে উঠেনি। তা সত্ত্বেও, শুধু বৃষ্টির জন্য এ বার খানাকুলের ধান্যগোড়ির জেলেপাড়া সংলগ্ন সদ্য সংস্কার হওয়া রূপনরায়ণ নদের বাঁধে ধস নামল। গত দু’মাসে বৃষ্টির জলেই রূপনারায়ণ এবং দ্বারকেশ্বর নদের বেশ কিছু বাঁধ ও পাড়ে ধস নেমেছে, অনেক ক্ষতও দেখা দিয়েছে।
গত বছরের বন্যায় জেলেপাড়ার বাঁধের ওই অংশে ১২০ মিটার ভেঙে গিয়েই পুরো ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েত এলাকা এবং আশপাশের জগৎপুর, রাজহাটি-১ ও ২ ও মাড়োখানা পঞ্চায়েত এলাকা তিন দফায় বিপর্যস্ত হয়। প্রথম দফায় হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনী নামিয়ে শ’দুয়েক দুর্গতকে উদ্ধার করতে হয়। একই জায়গায় এ বার ফের ধস নিয়ে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। উদ্বেগ প্রকাশ করে ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েত প্রধান বীণাপাণি ভৌমিক বলেন, “বিষয়টা সেচ দফতরের নজরে এনে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
সোমবার সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জেলা সেচ দফতরের এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন পাল বলেন মতে, “সদ্য সংস্কার করা বাঁধটির মাটি বসে যাওয়াতেই কিছুটা ধসের আকার নিয়েছে। এটা সংস্কার করে দেওয়া হবে। একই ভাবে অন্যান্য বাঁধের বসে যাওয়া অংশ এবং বৃষ্টির জল গড়িয়ে সৃষ্টি হওয়া বাঁধের ক্ষতগুলিও মেরামত করা হবে।” এই সব ধস নিয়ে কোনও আশঙ্কার কারণ নেই বলেও তাঁর দাবি।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁধ সংস্কারের দরপত্রে নির্বাচিত ঠিকাদার সংস্থাই সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করবে। জায়গাগুলি চিহ্নিত করে তাদের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। তবে, এর বাইরে ধান্যগোড়িরই রূপনারায়ণ নদের পোড়েপাড়ার বাঁধের ধস সংস্কারের প্রকল্প রচনা করে পাঠানো হলেও এখনও রাজ্য স্তরের অনুমোদন মেলেনি। গোঘাটের মণ্ডলগাঁথিতে দ্বারকেশ্বর নদের পাড়ের ধস সংস্কারের প্রকল্প রচনা করে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত অগস্ট মাসের গোড়া থেকেই মহকুমার নদনদীগুলির বাঁধে ধস দেখা যায়। ধান্যগোড়িতে রূপনারায়ণের বাঁধ ধসে পোড়েপাড়ায় বেশ কিছু বাড়িরও ক্ষয়ক্ষতি হয়। একই রকম ভাবে মুণ্ডেশ্বরী নদীর হরিণখোলা সংলগ্ন পাড় ধসেও বেশ কয়েকটি বাড়ির ক্ষতি হয়। দ্বারকেশ্বর নদের পাড় ধসে গোঘাটের মণ্ডলগাঁথির একটি রিভার-পাম্পের ঘরও ঝুলছে। গোঘাটের ভাদুর পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় দু’কিমি জুড়ে আরও বহু জায়গায় পাড় ভাঙছে বলে অভিযোগ প্রধান শান্তিনাথ রায়ের।