স্কুলের আবাসিকদের টিসি দেওয়ায় উত্তেজনা। —নিজস্ব চিত্র।
এক সঙ্গে ১৪ আবাসিক ছাত্রকে টিসি দেওয়ার ঘটনায় শোরগোল হুগলির কাশ্বাড়া ইয়াসিন মণ্ডল শিক্ষা নিকেতনে। ওই হাই স্কুলের হস্টেলে থাকে ৬৮ জন পড়ুয়া। তাদের মধ্যে কয়েক জকে আচমকা টিসি দেওয়ার খবর পেয়ে স্কুলে আসেন অভিভাবকরা। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই পড়ুয়াদের আচরণ ভাল নয়। তাই ওই সিদ্ধান্ত। কিন্তু পরে অভিভাবক এবং স্কুল পরিচালন সমিতির সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত বদল হয়েছে বলে খবর।
ওই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানশিক্ষক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘হস্টেলে জায়গা কম। কিছু পড়ুয়ার আচরণ ঠিক নয়। তাই তাঁদের টিসি দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকেরা স্বেচ্ছায় কয়েক জন পড়ুয়াকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইছিলেন। তবে কেউ যদি হস্টলে থাকতে চায় থাকতে পারে।’’ যদিও অভিভাবকদের অভিযোগ ভিন্ন। পোলবা দাদপুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বনানী ঘোষ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কোনও ছাত্রকেই স্কুল থেকে এ ভাবে টিসি দেওয়া যায় না। আমরা বলেছি, সবাইকে নিয়ে স্কুল চলবে।’’ একই বক্তব্য স্কুল পরিচালন সমিতিরও। তার সভাপতি তানসেন মল্লিক জানান, স্কুল কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে ছাত্র স্কুলে ভর্তি হতে চাইবে তাকে নিতে হবে। কিন্তু প্রধানশিক্ষক সেটা মানতে চাইছেন না। অনেককে টিসি দেওয়ার কথা বলেছেন। তাদের নিতে চাননি। সেটা নিয়েই সমস্যা।’’ তাঁর অভিযোগ, প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে সহশিক্ষকদের বনিবনার সমস্যা আছে। স্কুল কমিটির যে সিদ্ধান্ত সেটা কার্যকরী হচ্ছে না। আবার স্কুলের হিসাবপত্র চাইলেও পাওয়া যায় না। এ নিয়ে আগামী শনিবার সবার সামনে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তানসেন। তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রধানশিক্ষক আসলে হস্টেল তুলে দিতে চান। কিন্তু আমরা বলেছি, কাউকে স্কুল থেকে ফেরানো যাবে না।’’
প্রধানশিক্ষকের দাবি, স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে যে টাকা আসত, সেটা আর পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অসুবিধায় পড়েছেন তাঁরা। আলিনগর স্কুলে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। তাদের উপর চাপও দেওয়া যায় না। হস্টেলে ৪০ জন ঠিকঠাক থাকতে পারে। সেখানে ৬০-৬৫ জন থাকাটা সমস্যার। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চাপে পড়ে সিদ্ধান্ত বদল করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।