Plastic waste

টাকা নেই, প্লাস্টিক বর্জ্যে রাস্তা তৈরি বন্ধ হুগলিতে

হুগলিতে প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে রাস্তা নির্মাণ শুরু করে আরামবাগ ব্লক প্রশাসন। ২০২১ সালের ৫ জুন ‘পরিবেশ দিবসে’ ওই কাজ শুরু হয়।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৩ ০৯:২৯
Share:

অক্ষত রয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে আরামবাগের কাপসিট আইআইটি কলেজ এলাকার রাস্তা (বাঁ দিকে)।  পূর্ব বর্ধমানের উচালনের সেই নীল রঙের পথ। নিজস্ব চিত্র

একশো দিনের কাজ নেই। তাই, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে তৈরি রাস্তার সংখ্যা বাড়েনি হুগলি জেলায়।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের রায়না-২ ব্লকের উচালনে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করে তৈরি নীল রঙের রাস্তা চোখ টেনেছে হুগলির প্রশাসনিক আধিকারিকদের। দেখনদারি এবং বেশি মজবুত ওই রাস্তা বানানোর কথা ভাবছেন তাঁরা। তবে, চিন্তা তহবি‌ল নিয়ে।

হুগলিতে প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে রাস্তা নির্মাণ শুরু করে আরামবাগ ব্লক প্রশাসন। ২০২১ সালের ৫ জুন ‘পরিবেশ দিবসে’ ওই কাজ শুরু হয়। তার পরে গত বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন মাপের তিনটি রাস্তা ওই প্রযুক্তিতে হয়েছে। তিনটি রাস্তাই অক্ষত। তবে রায়নার মতো নীল নয়, সাধারণ পিচরাস্তার মতোই কালো।

Advertisement

আরামবাগের বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রায়নার নীল রঙের রাস্তা আরও বিজ্ঞানভিত্তিক। তাপ এবং জল কম শোষণ করবে। স্থায়িত্ব বেশি হবে। আমরাকাজের সময় শুধু বর্জ্য প্লাস্টিক ব্যবহারেই জোর দিয়েছি। নীল রং উন্নত চিন্তা-ভাবনার ফসল। ভবিষ্যতে আমরাও করব।’’

রায়নার রাস্তাটির ক্ষেত্রে সেখানকার ইঞ্জিনিয়াররা জানান, বিটুমিনের সঙ্গে বিশেষ পদ্ধতিতে অব্যবহৃত প্লাস্টিক মিশিয়ে ওই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে রাস্তার পিচ গরম কম হবে, জল জমার প্রবণতাও কম থাকবে। দুবাইয়ে চড়া তাপমাত্রার জন্য রাস্তার উপরে নীল রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়। তা থেকেই এই চিন্তা এসেছে।

আরামবাগ ব্লকে প্লাস্টিক বর্জ্যে নতুন কোনও রাস্তা হচ্ছে না কেন? ব্লকের আধিকারিকরা জানান, প্রথমত, রাস্তাগুলি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সঙ্গে কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তহবিলের মেলবন্ধনে হয়েছিল। এখন ১০০ দিন কাজ প্রকল্প বন্ধ থাকায় তহবিলে টান পড়েছে।খানাকুল ১ ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আরামবাগের সাফল্যের পরে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় তা আর হয়নি।’’

জেলার আরও কয়েকটি ব্লকের বিডিওরা জানিয়েছেন, ১০০ দিনের প্রকল্প ছাড়াও এই কাজে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত পঞ্চদশ অর্থ কমিশন বা নিজস্ব তহবিলে করা যেতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল দুর্বল। আর, পঞ্চদশ কমিশনের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করতে হয়। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহও একটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। এ ‌ছাড়া, নতুন কোনও প্রযুক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে সারাক্ষণ কারিগরি এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের তদারকিও দরকার। অন্য সব কাজ ফেলে সেই সময় দেওয়াও সমস্যা।

জেলা পরিষদের জেলা ইঞ্জিনিয়ার মহাজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করে রাস্তার কাজ এখন পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। আরামবাগের রাস্তাগুলিতেআমরা নজর রেখেছি। কম ভারবাহী গাড়ি চলাচল করে, ভবিষ্যতেএমন রাস্তা প্লাস্টিক বর্জ্যে করার পরিকল্পনা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement