ইজ়রায়েলে আটকে থাকা বাঙালি গবেষক দীপন চৌধুরী। —ফাইল চিত্র ।
যুদ্ধ চলছে ইজ়রায়েলে। সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র বাহিনী হামাস। আর সেই যুদ্ধক্ষেত্রেই আটকে পড়েছেন অনেক বাঙালি। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন হুগলির হিন্দমোটর শিবতলা স্ট্রিটের বাসিন্দা দীপন চৌধুরী। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই পরিস্থতি বদলে গিয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে ইজ়রায়েলের আকাশ। যার জেরে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে দীপনের মতো ইজ়রায়েলে আটকে থাকা বহু বাঙালির পরিবার।
দীপনের পরিবার সূত্রে খবর, গত মে মাসেই গবেষণার জন্য ইজ়রায়েল গিয়েছেন দীপন। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে দীপন চেন্নাই থেকে পিএইচডি করেছেন। সুইৎজ়ারল্যান্ডেও গিয়েছিলেন। বাইরে বাইরে অনেকটা সময় কেটেছে তাঁর। তবে দীপনের মা তন্দ্রা চৌধুরী হিন্দমোটরেই রয়েছেন। ছেলের সঙ্গে তাঁর রোজই কথা হচ্ছে। ছেলে নিরাপদে আছেন কি না, দিনে দু’বেলা সেই খোঁজ নিচ্ছেন। তবে ছেলে যে কোনও পরিস্থিতি সামলে নেবে বলেও তাঁর বিশ্বাস। তিনি যে নিরাপদে রয়েছেন, ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে তেমনটা জানিয়েছেন দীপনও।
দীপন জানিয়েছেন, তিনি যেখানে আছেন সেখানে আরও প্রায় দু’শো ভারতীয় রয়েছেন। তাঁদের নিজেদের একটা হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপও রয়েছে। সেই গ্রুপের মাধ্যমেই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখেছেন তাঁরা। ভারতীয় দূতাবাস খুব কাছে থাকার কারণেও সুবিধা হচ্ছে। যদিও ক্ষেপণাস্ত্রের আওয়াজ তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। যুদ্ধের সাইরেনে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তাঁদের। মোটা লোহা দিয়ে তৈরি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। তবে এই পরিস্থিতিতেও খাবার এবং পানীয় জলের অভাব নেই বলে জানিয়েছেন দীপন। চলছে তাঁর গবেষণার কাজও। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইজরায়েলের নাগরিক যাঁরা, তাঁদের সেনার কাজে চলে যেতে হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে দীপনের মাসি মিত্রা গুপ্ত বলেন, ‘‘দীপন ওখানে ঠিক আছে বলে জানিয়েছে। তবে আমাদের মনে শান্তি নেই। এখন জানি না কী হবে। ওখানে থাকবে না ভারতে পাঠিয়ে দেবে ওকে। ওর মা খুব শক্ত, কিন্তু আমার খুব চিন্তা হয়।’’
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট এক হাজার ৬৬৫ জন মারা গিয়েছেন। ইজ়রায়েলে প্রায় ৯০০ জন নিহত এবং প্রায় ২৩০০ জন আহত হয়েছেন। গাজ়ায় নিহত হয়েছেন ৭৬৫ জন।