‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে ক্ষোভ। বৃহস্পতিবার গোঘাটের বেঙ্গাইয়ে।
‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বৃহস্পতিবার হুগলির দু’জায়গায় গ্রামবাসীর ক্ষোভের কথা শুনতে হল ‘মমতার দূত’দের।
বৃহস্পতিবার ‘মমতার দূত’ হিসেবে পিয়ারাপুর পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গায় যান চাঁপদানির বিধায়ক তথা হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইন। তিনি চাঁপসরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে, সেখানকার বেহাল দশা নিয়ে তাঁর কাছে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসী। সেখানে পরিকাঠামো কিছুটা উন্নতির আশ্বাস দেন বিধায়ক। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক গ্রামবাসীর দানের জমিতে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নামেই, প্রাথমিক পরিষেবাটুকু মেলে না। ১০ বছর আগে ১০ শয্যার অন্তর্বিভাগ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু চালুই হয়নি। শয্যা, যন্ত্রপাতি পড়ে নষ্ট হয়েছে। আগাছায় ভরে গিয়েছে হাসপাতাল চত্বর। সব সময়ের চিকিৎসক ও নার্স থাকার কথা। কিন্তু, সেই ব্যবস্থা করা হয় না। ফলে, চাঁপসরা এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
গ্রামবাসীর দাবি, অবিলম্বে সর্বক্ষণের জন্য চিকিৎসক, নার্স এবং পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে হবে। বিধায়ক বলেন, ‘‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে। বহির্বিভাগ চালু আছে। উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় সর্বক্ষণের জন্য অন্তর্বিভাগ চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে সব সময়ের জন্য বহির্বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা চালু করার জন্য ব্যবস্থা নেব।’’ এলাকাবাসী অবশ্য চান, শুধু সর্বক্ষণের জন্য বহির্বিভাগ নয়, পুরোদস্তুর অন্তর্বিভাগ চালু হোক।
আবাস প্লাসের বাড়ি নিয়েও মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গিয়েছে। বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘ঘুরে দেখলাম, এলাকাবাসী রাজ্যের কোনও না কোনও প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। মানুষ খুশি। কেন্দ্রের সরকার মানুষের ঘরে ঘরে ফোন পৌঁছে দেওয়ার পরে বলা হচ্ছে, ফোন থাকলে আবাস প্লাসের ঘর পাওয়া যাবে না।’’ বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, মানুষকে পরিষেবা দিতে তৃণমূল ব্যর্থ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। আবাস প্রকল্পের ক্ষেত্রেও অপেক্ষাকৃত সচ্ছলদের নাম তালিকায় তোলার পিছনেও তৃণমূলই দায়ী। তৃণমূল এ কথা মানেনি।
‘দিদির দূত’ হিসেবে গিয়ে গোঘাটের বেঙ্গাই এবং সামন্তখণ্ডগ্রামে ক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জয়দেব জানাও। সেনাই গ্রামেও বিস্তর অভিযোগ ওঠে। এখানেও আবাস যোজনায় ঘর এবং রাস্তাঘাট নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন জয়দেহ। জয়দেব উত্তর দেন, “সব ধাপে ধাপে হবে।” পরে তাঁর দাবি, ‘‘কোথাও কোনও বিক্ষোভ হয়নি। মানুষ তাঁদের চাহিদার কথা জানিয়েছেন। আমরা তো সেটা জানতেই বেরিয়েছি। সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলেছি। সবই ধাপে ধাপে হবে।”