COVID-19 Vaccine

করোনা-টিকায় আপত্তি ‘গোলাপি দিদিমণি’দের

স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের দাবিতে কর্ণপাত করেননি। ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা নিতে বেঁকে বসায় বিপাকে পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রথম পর্বে করোনা-যোদ্ধা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণ চলছে। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে হাওড়া জেলায় টিকা নিচ্ছেন না একদল মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁরা গ্রামস্তরে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘স্বাস্থ্য সহায়িকা’ এবং ‘হেল্‌থ সুপারভাইজ়ার’ পদে কাজ করেন। গোলাপি শাড়ি পরে কাজ করতে হয় বলে গ্রামবাসীরা তাঁদের ‘গোলাপি দিদিমণি’ হিসেবে চেনেন।

Advertisement

ওই স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করতে গিয়ে তাঁদের জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ— সবই করতে হয়। কিন্তু পদোন্নতি ও বেতন বৃদ্ধির সুযোগ তাঁরা পান না। একই পদে তাঁদের কাজ করতে হয় বছরের পর বছর। নিজেদের ‘নার্সিং ক্যাডার’-এ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে তাঁরা একাধিকবার আন্দোলন করেছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের দাবিতে কর্ণপাত করেননি।

ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা নিতে বেঁকে বসায় বিপাকে পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কারণ, এর ফলে ১০০ শতাংশ টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাচ্ছে না বলে মেনে নিয়েছেন জেলা্র মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস। তিনি বলেন, ‘‘যে সমস্যার কথা ওঁরা বলছেন, তা স্বাস্থ্যভবন জানে। আমরাও একাধিকবার স্বাস্থ্যভবনে তাঁদের দাবিপত্র পাঠিয়েছি। কিন্তু এর সঙ্গে টিকাকরণের কোনও সম্পর্ক নেই। সকলের টিকা নেওয়া উচিত। তবে, ওঁদের একাংশকে বুঝিয়ে টিকা নিতে রাজি করানো হচ্ছে। অনেকে নিচ্ছেন।’’

Advertisement

স্বাস্থ্য সহায়িকা এবং ‘হেল্‌থ সুপারভাইজ়ার’ পরে হাওড়ায় প্রায় ৫০০ মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। করোনার প্রকোপ যখন তীব্র ছিল, তখন তাঁরা স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশিকা মেনে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন। প্রথম পর্যায়ের টিকাকরণের সময়ে তাঁদের নামও তালিকাভূক্ত করা হয়। কি‌ন্তু তাঁরা টিকা নিচ্ছেন না। এ কথা তাঁরা চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্যভবন-সহ বিভিন্ন মহলে জানিয়েও দিয়েছেন বলে ওই স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি। একইসঙ্গে তাঁরা অবশ্য জানিয়েছেন, টিকাকরণে সব ধরনের সহায়তা তাঁরা করছেন।

ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, টিকা না-নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা তাঁরা টিকাকরণ শুরু হওয়ার আগেই স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও তাঁদের দাবিপূরণের কোনও প্রতিশ্রুতি মেলেনি।

‘জয়েন্ট ফোরাম অব অল ওয়েস্টবেঙ্গল হেল্‌থ ওয়ার্কার্স ফিমেল অ্যান্ড হেল্থ সুপারভাইজ়ার ফিমেল ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর হওড়া জেলার নেত্রী মমতা দাস বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে আমাদের মতো ১০ হাজার মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী আছেন। সবাই প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত। রাজ্য জুড়েই টিকা না-নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হাওড়া জেলাতেও আমরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে টিকা নিচ্ছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement