গোঘাটের বদনগঞ্জ-ফলুই-১ পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ।
প্রশাসনিক তদন্তের পরে আবাস প্লাসের তালিকায় শেষমেশ কে টিকলেন, কে অযোগ্য বলে বাতিল হলেন, এখনও প্রকাশিত হয়নি। তারমধ্যেই ওই তালিকা থেকে নাম বাতিল এবং আদৌও নাম না-থাকা নিয়ে হুগলি জুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ লেগেই আছে।
আবাস তালিকায় আদৌও নাম ওঠেনি কেন, এই প্রশ্ন তুলে শুক্রবার সকালে গোঘাট-২ ব্লকের বদনগঞ্জ-ফলুই পঞ্চায়েত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েকশো গ্রামবাসী। প্রধান লক্ষ্মী মালিক কয়েক দিন পঞ্চায়েতে আসছেন না। উপপ্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষালকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তিনি ফিরে যান। পরে বিক্ষোভকারীদের দাবিমতো ঘটনাস্থলে বিডিও দেবাশিস মণ্ডল গেলে তাঁকে ঘিরেও কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলে। বিডিও পরবর্তী সময়ে তাঁদের নাম পাঠানোর আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অর্জুন হাজরার অভিযোগ, ‘‘২০১৭-’১৮ সালে আমাদের দু’টি মৌজার ৩১৮ জনের আবেদন ছিল। তার মধ্যে জনাকুড়ি বাদে বাকিদের নাম সমীক্ষা তালিকায় তোলাই হয়নি।’’ বিডিও বলেন, ‘‘যাঁদের নাম তালিকায় নেই, তা জেলায় পাঠানো আছে। পরবর্তী সময়ে হয়তো আসবে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শান্তনু বালা বলেন, ‘‘হুগলিতে যাচাই প্রক্রিয়ার পরে এখনও পর্যন্ত উপভোক্তা ১ লক্ষ ৭৪ হাজারের মতো দাঁড়িয়েছে। তাঁদের রেজিস্ট্রেশন এবং জিয়ো ট্যাগিং চলছে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রক্রিয়াতেও আরও কিছু বাদ পড়তে পারে।
আবাস প্রকল্পে গরমিলের অভিযোগে তুলে শুক্রবার চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েতের দুই তৃণমূল সদস্যকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। মঙ্গল চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্রনাথ রায় নামে ওই দুই সদস্য এ দিন রবীন্দ্রনগরের চাড়ের গোড়া এলাকায় আবাস প্রকল্পের কাজ দেখতে গিয়েছিলেন। তখনই বিক্ষোভ হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকৃত গরিব মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পাননি। অথচ, পাকা বাড়ি রয়েছে, এমন মানুষ ঘর পেয়েছেন। ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে একাধিক জনের থেকে টাকা নিয়েও তা করা হয়নি। বিক্ষোভের মাঝে বিজেপির লোকজন চলে এলে তৃণমূলের ওই দুই সদস্যের সঙ্গে তাঁদের বাদানুবাদ হয়। পরিস্থিতি তেতে ওঠে।
স্থানীয় এক বাসিন্দার প্রশ্ন, ‘‘ঘরটা একদম ভেঙে পড়েছে। বর্ষাকালে ঘর জলে থইথই করে। আবাস প্রকল্পে ঘর পাওয়ার যোগ্য আমরা নই?’’ রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য, ‘‘তালিকায় নাম তুলতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তেজনা ছড়াতে বিরোধীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গোলমাল পাকিয়েছেন। পঞ্চায়েতে বিষয়টি জানাব।’’ উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের সদস্যেরা এলাকায় যেতেই মানুষকে উত্তেজিত করে বিজেপির কিছু লোক বিক্ষোভ শুরু করেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজানো অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘প্রকৃত গরিব লোকেদের বাদ দিয়ে তৃণমূলের ঝান্ডাধারীকিছু মানুষ, যারা যোগ্য নন, তাঁদের নাম তালিকায় ঢোকানো হচ্ছে। এ ভাবে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি আর চলবে না। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ করেছেন।’’