হাওড়া পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
হাওড়া পুরসভার ভিতরের চত্বরে বসবাসকারী দখলদারদের সরে যাওয়ার কথা বলে এর আগে একাধিক বার নোটিস দিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দখলদারেরা উঠে না যাওয়ায় শুক্রবার দুপুরে মাইকিং করে বলা হয়, শনিবারের মধ্যে তাঁদের উঠে যেতে হবে। এর পরেই পুরসভা চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়। কয়েকশো দখলদার বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এক পুর আধিকারিক তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁকে ধাক্কা মারা হয় বলে অভিযোগ। পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কর্মী নন, এমন বহু লোক পুরসভা চত্বরে ঘর তৈরি করে বাস করছেন। সেখানে চলছে নানা অসামাজিক কাজ, চুরি করা হচ্ছে পুরসভার বিদ্যুৎ। যদিও বসবাসকারীদের দাবি, তাঁরা কেউ বহিরাগত নন। সকলেই পুরসভার অস্থায়ী কর্মী।
উল্লেখ্য, হাওড়া পুরসভার পিছন দিকে টালির ঘর বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে ৮০-৯০টি পরিবার। মূলত বাম আমল থেকে পুরসভার কিছু অস্থায়ী কর্মী, বিশেষত জঞ্জাল অপসারণ দফতরের কর্মীরা অস্থায়ী ঘর বানিয়ে সপরিবার বসবাস করছিলেন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এই দখলদারদের অধিকাংশের সঙ্গে পুরসভার কোনও যোগ নেই।
এ দিন পুরসভার তরফে মাইকিং করে শনিবারের মধ্যে তাঁদের উঠে যেতে বলা হয়। এই ঘোষণা শুনেই পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে কয়েকশো বসবাসকারী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে পুরসভার অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (পার্ক ও উদ্যান) পার্থ লাহিড়ীকে ধাক্কা মারা হয় বলে অভিযোগ। পরে বিক্ষোভকারীরা পুর কমিশনার ধবল জৈনের সঙ্গে দেখা করলে তিনি তাঁদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। ঘটনার পরে পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত ছ’মাস ধরে ওই বহিরাগতদের একাধিক বার নোটিস দিয়ে উঠে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কানে তোলেননি।’’
পুরসভার অভিযোগ, বর্তমানে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের পূর্বপুরুষেরা বহু আগে পুরসভায় চাকরি করতেন। বসবাসকারীরা অধিকাংশই তাঁদের আত্মীয়স্বজন। আরও অভিযোগ, তাঁদের মদতেই পুরসভা চত্বরে মাঝরাতে নানা অসামাজিক কাজ হয়। এমনকি, পুরসভা থেকে হুকিং করে বিদ্যুৎও চুরি করা হচ্ছে।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঝুপড়ির বাসিন্দারা। তাঁদেরই এক জন কৃষ্ণকুমার দাস বলেন, ‘‘যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁরা পুরসভার অস্থায়ী কর্মী। এমনকি, প্রায় ২৫ জন স্থায়ী কর্মীও আছেন। পুরসভা যা বলছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’