—প্রতীকী চিত্র।
গ্রাহকদের ঋণের কিস্তির টাকা তছরুপের অভিযোগকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল হাওড়ার আন্দুলের পূর্বপাড়ার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক চত্বর। কয়েকশো স্থানীয় বাসিন্দা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ঘেরাও করে রাখলেন। এর ফলে আটকে পড়েন ব্যাঙ্কের সব কর্মীরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কৌশিক পাড়ুই নামে ওই ব্যাঙ্কের এক কর্মীর কাছে ঋণের কিস্তির টাকা কয়েক মাস ধরে দেওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছিল, সেই টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে না। ফলে, ঋণ যেমন ছিল, তেমনই রয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে প্রথমে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন গ্রাহক ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছিলেন। কিন্তু ওই গ্রাহকদের অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেননি। শেষে শনিবার রাত পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ঘেরাও করে রাখার পাশাপাশি গ্রাহকেরা পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানান। বেশি রাতে সাঁকরাইল থানার পুলিশ এসে অভিযুক্ত কৌশিক পাড়ুইকে গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে আন্দুল পূর্বপাড়ায় ওই ব্যাঙ্কটি খোলার পরে একের পর এক গ্রাহক কর্তৃপক্ষের কাছে এই মর্মে অভিযোগ করেন যে, তাঁদের ঋণের মাসিক কিস্তির টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে না। গ্রাহকেরা দাবি তোলেন, অভিযুক্ত কৌশিকের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাঁদের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। এই দাবিতে রাত পর্যন্ত ঘেরাও চলে। অবশেষে বেশি রাতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ থানায় সব জানান।
শেখ নাজিম নামে এক গ্রাহক রবিবার জানান, আট মাস আগে তিনি কৌশিককে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধের জন্য দিলেও সেই টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। উল্টে নাজিম জানতে পারেন, তাঁর নামে ৫ লক্ষ টাকার ঋণ মঞ্জুর হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ঋণ মঞ্জুর হওয়ার যে চিঠি কৌশিক দিয়েছিলেন, পরে দেখা যায় সেটি ভুয়ো।’’
গ্রাহকদের অভিযোগ, শুধু নাজিম নন, আরও একাধিক জনকে একই কায়দায় ঠকিয়েছেন
কৌশিক। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ওই কর্মী গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের আর্থিক প্রতারণা করেছেন। যা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। ধৃত কৌশিককে রবিবার হাওড়া আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেছে সাঁকরাইল
থানার পুলিশ। ওই কর্মী কত টাকা তছরুপ করেছেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে অবশ্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।