বকপোতা সেতু। ছবি: সুব্রত জানা
খুব বেশি ক্ষোভ শোনা যাচ্ছে না।
পাঁচ বছরে অনেকটা পাল্টে গিয়েছে হাওড়ার প্রান্তিক বিধানসভা উদয়নারায়ণপুর। বছর তিনেক আগে পর্যন্ত বন্যাপ্রবণ এই এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কারণ, এলাকাটি দামোদরের পশ্চিম পাড়ে। সেচ দফতরের ভাষায় ‘স্পিল’ এলাকা। বাঁধ দেওয়া যায় না। ফলে, ডিভিসি বেশি জল ছাড়লে উদয়নারায়ণপুরে বন্যা অবধারিত ছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ অনেকটা জোরদার হয়েছে। ফলে, কমেছে বন্যার প্রকোপ।
বকপোতায় দামোদরের উপরে নতুন সেতু হাওড়া-হুগলির মধ্যে যোগযোগ ব্যবস্থা আরও প্রসারিত করেছে। নতুন বাসস্ট্যান্ড হয়েছে। তাঁত-হাট হয়েছে। গঠিত হয়েছে তাঁতশিল্পীদের জন্য ১৪টি ক্লাস্টার। গড় ভবানীপুরে তৈরি হয়েছে রায়বাঘিনী রানি ভবশঙ্করী পর্যটনকেন্দ্র। ভবানীপুরে খোলা হয়েছে এসডিপিও (আমতা)-র নতুন কার্যালয়। উদ্বোধন হয়েছে নতুন পেঁড়ো থানা। উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ১১০। খিলাতে চলছে আইটিআই কলেজ।
এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আছে উদয়নরায়ণপুর ব্লকের ১১টি এবং আমতা-১ ব্লকের ৫টি পঞ্চায়েত। আমতা থেকে ঝাঁ চকচকে ৩৪ কিলোমিটার রাস্তা চলে গিয়েছে এই বিধানসভার বুক চিরে। রাস্তার দু’পাশে শস্যশ্যামলা জমি। এখানে আলু, পাট ও বাদামের চাষ হয়। ভাল রাস্তা হওয়ায় চাষিরা সহজে আনাজ নিয়ে যাতায়াত করতে পারেন।
অপ্রাপ্তি কিছু নেই, এমন নয়। সর্বত্র বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছয়নি। এলাকার সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষজন একটি প্রেক্ষাগৃহের অভাব বোধ করেন। এলাকা থেকে প্রকাশিত হয় বহু লিটল ম্যাগাজিন। সাহিত্য বা সংস্কৃতি সমাবেশ করার জন্য প্রেক্ষাগৃহ খুবই প্রয়োজন বলে জানান একটি পত্রিকার সম্পাদক নিমাই আদক। বাসস্ট্যান্ডে সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানোরও দাবি আছে। স্থানীয় বাসিন্দা তারকনাথ মেটে বলেন, ‘‘উদয়নারায়ণপুরে রেল যোগাযোগ নেই। বেসরকারি বাসের উপরে ভরসা করা যায় না। সরকারি বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। উদয়নারায়ণপুর এখন অনেক উন্নত। কাজের সূত্রে বহু মানুষ এখানে নিয়মিত আসেন। কিন্তু বাসের সংখ্যা কম থাকায় বিশেষ করে উদয়নারায়ণপুর থেকে ফেরার সময়ে অনেকের বেশ অসুবিধা হয়।’’
বিদায়ী বিধায়ক সমীর পাঁজাকে এ বারও প্রার্থী করেছে দল। মানুষের অপ্রাপ্তির বিষয়গুলি নিয়ে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পরিবহণ দফতরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে বলে সমীরবাবু জানান। তিনি বলেন, ‘‘রানি ভবশঙ্করী পর্যটনকেন্দ্রে একটি ৬০০ আসনের অডিটোরিয়াম করা হয়েছে। উদয়নারায়ণপুরেও একটি অডিটোরিয়াম করার পরিকল্পনা আছে। সব পঞ্চায়েতেই বাড়ি বাড়ি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জল পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়েছে।’’