সাইলেন্সর পাইপ কাটা এমন বাইখ নিয়েই উঠছে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক বছরে মোটরবাইকের সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে গ্রামীণ হাওড়ায়। আরোহীদের একাংশ বাইকের সাইলেন্সর পাইপ কেটে বা ফাটিয়ে বিকট আওয়াজ তুলে যে ভাবে যাতায়াত করছে, তাতে সাধারণ মানুষের প্রাণান্তকর অবস্থা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই বিকট আওয়াজের প্রতিবাদ করায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চেঙ্গাইলের কলাবাগান এলাকায় বাপন মান্না (১৮) নামে এক তরুণকে ছুরি মেরে খুনের ঘটনা সামনে আসতেই ফের বহু মানুষ বাইক-দৌরাত্ম্য নিয়ে সরব হয়েছেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
হাওড়া গ্রামীণের জেলা ট্র্যাফিক বিভাগের ডিএসপি অনির্বাণ হোমরায় বলেন, ‘‘প্রতিদিন রাস্তায় নজরদারি চালানো হয়। বিধি না মেনে বাইক চালালে নানা ধরনের মামলা করা হয়। যে সব বাইক বিকট শব্দ করে যাতায়াত করে, তার আরোহীদের মোটা টাকা জরিমানাও করা হয়। নজরদারি আরও
বাড়ানো হবে।’’
বহু মানুষেরই ধারণা, রাস্তায় মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এক শ্রেণির যুবক নামী-দামি বাইকের সাইলেন্সর পাইপ কেটে বা ফাটিয়ে দিয়ে বিকট আওয়াজ তৈরি করে। এতে তারা মজা পায়। কিন্তু তাদের মজায় সাধারণ মানুষের
অসুবিধা হয়।
গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন রাস্তার ধারে যে সব ছোটখাটো বাইক মেরামতির দোকান রয়েছে, সেই সব দোকান থেকেই বাইকের সাইলেন্সর পাইপ কাটা হয় বলে অনেকে জানিয়েছেন। এক মিস্ত্রি বলেন, ‘‘কিছু যুবক গ্যারাজে এসে বাইকের আওয়াজ বাড়ানোর জন্য মোটা টাকা খরচ করতেও পিছপা হয় না। সাইলেন্সর পাইপের কিছুটা অংশ কেটে দিলে এবং ওই পাইপের মধ্যে থাকা জাল খুলে দিলেই বিকট শব্দ হয়। এ ছাড়াও বাইক নির্মাতা সংস্থার দেওয়া সাইলেন্সর পাইপ খুলে দিয়ে বাজারে চলতি সাইলেন্সর পাইপ কিনেও লাগাচ্ছে অনেকে। তাতেও বিকট শব্দ হয়।’’
এমনই এক বাইক আরোহী বলেন, ‘‘বাইকে শব্দ বেশি হলে বেশ মজা লাগে। মানুষ এমনিতেই সরে যান। হর্ন বাজাতে হয় না। তাতে বাইক নিয়ে দ্রুত গতিতে
যাওয়া যায়।’’
উলুবেড়িয়া শহরে দিনভর ভিড় লেগেই থাকে। তার মধ্যেই বিকট শব্দ করে বাইক গেলে মানুষ চমকে যান। দুর্ঘটনাও ঘটে। ভয়ে অনেকেই প্রতিবাদ করতে চান না। উলুবেড়িয়ার এক প্রবীণ নাগরিক বলেন, ‘‘রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় হঠাৎ করে বাইকের বিকট শব্দে বুক কেঁপে ওঠে। থতমত খেয়ে যেতে হয়। কিন্তু কিছু বলার উপায় নেই। বললেই কটূ কথা শুনতে হয়। এ সব পুলিশের দেখা উচিত।’’