শিক্ষাঙ্গন/ ১
Amta

Amta Primary School: দেড় লক্ষের মধ্যে বরাদ্দ ৪০ হাজার, মেলেনি তাও, বেহাল স্কুলে ছাত্র কমার আশঙ্কা শিক্ষকদেরই

 যা ফল হওয়ার তাই হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শ্রেণিকক্ষের পলেস্তারা খুলে পড়ছে।

Advertisement

নুরুল আবসার

আমতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:০৫
Share:

ভগ্নপ্রায় স্কুলের শ্রেণিকক্ষ। নিজস্ব চিত্র

আমপানে উড়ে গিয়েছে স্কুলের মিড ডে মিল রান্নার ঘর। ভেঙে গিয়েছে শ্রেণিকক্ষের জানালা। সংস্কারের জন্য স্কুলের তরফে ব্লক প্রশাসনের কাছে দেড় লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে এক লক্ষ টাকা ধরা ছিল পানীয় জলের জন্য। স্কুল সূত্রে খবর, হিসেব শেষে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু তিন মাস পরও একটা পয়সা মেলেনি বলে অভিযোগ আমতা-১ ব্লকের উদং হাই অ্যাটাচড্ প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

যা ফল হওয়ার তাই হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শ্রেণিকক্ষের পলেস্তারা খুলে পড়ছে। চেয়ার-টেবিল ভেঙে পড়ে রয়েছে। বৈদ্যুতিক তার ঝুলছে অনেক জায়গায়, শৌচাগারে জঙ্গল। ইতিমধ্যে আবার নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অভিভাবকরা এমন ভগ্নপ্রায় স্কুলে সন্তানদের আদৌ পাঠাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে স্কুলের শিক্ষকরা।

প্রধান শিক্ষক তথা ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রেন্ড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পিন্টু পাড়ুইয়ের গলাতেও হতাশা। তিনি বলেন, ‘‘শুনছি জানুয়ারি মাস থেকেই প্রাথমিকে পঠন-পাঠন শুরু হতে পারে। অথচ স্কুলবাড়ির যা দশা, তাতে মেরামতি না হলে কীভাবে পঠন-পাঠন শুরু করব বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে খরচ বাঁচানোর জন্য অনেকেই সন্তানদের ইংরাজি মাধ্যম স্কুল থেকে ছাড়িয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি করছেন। সেই কারণে বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলির ছাত্র সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু আমাদের স্কুলের ভগ্নদশা দেখে অভিভাবকেরা ছাত্রদের পাঠাতে চাইছেন না। ফলে ছাত্র আরও কমে যাবে বলে আমাদের আশঙ্কা।’’

Advertisement

১৯৪৬ সালে পথচলা শুরু উদং হাই অ্যাটাচাড প্রাথমিক স্কুলের। পরে এটি হাইস্কুলে উন্নীত হয়। তারপরও প্রাথমিক বিভাগটি এখানেই থেকে যায়। হাইস্কুলের দান করা চারটি ঘরে চলে প্রাথমিকের ক্লাস। কিন্তু তার মধ্যে আবার দু’টি ঘর বেহাল। বাকি দু’টি ঘরে কোনওক্রমে চলে পড়াশোনা। আবার মিড ডে মিল খাওয়া হয় ওই ঘরেই। প্রাথমিক স্কুলটির পড়ুয়াদের জন্য নেই কোনও মাঠ বা পানীয় জলের ব্যবস্থা। হাইস্কুল থেকেই জল আনতে হয়। সকালে হয় প্রাথমিকের পড়াশোনা। আর বেলা গড়ালে হাইস্কুলের। স্কুল কর্তৃপক্ষের কথায়, ‘‘শীতের সকালে অনেক অভিভাবক সন্তানদের পাঠাতে চান না। সেই সময় একটু বেলার দিকে ক্লাস হলে ভাল হত। কিন্তু তার উপায় তো নেই!’’

এখন স্কুলে ৫০ জন পড়ুয়াকে পড়ান চারজন শিক্ষক। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত অভিভাবকদের বৈঠক হয়। সেখানেই অভিভাবকরা স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নয়নের দাবি জানান। শিক্ষকদেরও বক্তব্য, স্কুলের সামগ্রিক পরিকাঠামোর উন্নতি না হলে ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। পৃথক ভবনের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, কেউ
জমি দান করলে সেখানে আলাদা নিজস্ব ভবন তৈরি করা যায়। তবে প্রধান শিক্ষক জানান, তেমন
কোনও জমি মেলেনি।

স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নতি প্রসঙ্গে আমতা-১ ব্লকের সিরাজবাটি সার্কেলের পরিদর্শক (এসআই) দীপঙ্কর কোলে বলেন, ‘‘স্কুলের পানীয় জলের ব্যবস্থা আলাদা করে করার দরকার নেই। হাইস্কুলের পরিকাঠামোই তারা ব্যবহার করতে পারে। বাকি সংস্কারের জন্য টাকা চেয়ে রাজ্য শিক্ষা দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। টাকা এখনও আসেনি।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement