Bandel

বৃষ্টিতে ফের নিকাশি বেআব্রু হুগলি জুড়ে

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২১ ০৭:২২
Share:

জলমগ্ন ব্যান্ডেলের কেওটা অঞ্চল। ছবি: তাপস ঘোষ।

মরসুমের প্রথম টানা বৃষ্টিতেই নিকাশি ব্যবস্থা বেআব্রু হয়ে গেল হুগলির পুর এলাকাগুলিতে। বিস্তীর্ণ এলাকায় কোথাও হাঁটু জল জমেছে, কোথাও আবার নিকাশি নালা, রাস্তা— সব জলের নীচে একাকার। এই ‘বাৎসরিক রোগ’ নিরাময়ে পুরসভাগুলি কেন কোনও পদক্ষেপ করে না, উঠছে সেই প্রশ্ন।

Advertisement

অধিকাংশ পুর-এলাকার পুকুর বুজিয়ে আবাসন উঠেছে। ফলে, আগে যেখানে পুকুরের মাধ্যমে বর্ষার জমা জল নেমে যেত, এখন সে পথ বন্ধ। কোথাও জল-নিকাশির নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই, আবার কোথাও নালা আবর্জনায় ভর্তি। ফলে, যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। জেলাসদর চুঁচুড়ায় বর্ষা এসে যাওয়ার পর দখল হয়ে যাওয়া নিকাশি নালা উদ্ধারে নেমেছে পুরসভা। নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিধায়ক। শহরবাসীর প্রশ্ন, এই কাজ এতদিন হয়নি কেন? পুরভোট দোরগোড়ায়, সেই তাগিদে?

পুরপ্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘ভোট নয়, সারা বছরই কাজ হয়। তবে কিছু জায়গায় নিকাশি সমস্যা থাকায় কাজ চলছে।’’

Advertisement

উত্তরপাড়া পুরসভা এক সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ভাল কাজের নিরিখে পুরস্কার পেয়েছিল। সেই সময় প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ করায় পুর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল। এরপর পুর কর্তৃপক্ষ উত্তরপাড়া, ভদ্রকালী, হিন্দমোটর-সহ অধিকাংশ জায়গার নর্দমা ঢেকে ফুটপাত করে দেন। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো। নিকাশি নালা পরিষ্কার হচ্ছে না। প্লাস্টিক, মদের বোতল, আবর্জনা জমে নোংরা জল উপচে আসছে রাস্তায়। সব মিলিয়ে শহরবাসী জলবন্দি। কাঁঠালবাগান বাজারে রেলের গলাপোলে একবুক জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। মানুষ বাধ্য হচ্ছেন সাইকেল ঘাড়ে করে রেললাইন পেরিয়ে পশ্চিমপাড়ে মাখলায় যেতে।

শ্রীরামপুরের নিউ মাহেশ সংলগ্ন রেললাইনের গলাপোলেও জল জমেছে। রেললাইনের পশ্চিমপাড়ে হাঁড়িপাড়া, সোসাইটি মাঠ প্রভৃতি জায়গাতেও জল জমার সমস্যা রয়েছে। পার্শ্ববর্তী রাজ্যধরপুর পঞ্চায়েতের ঘোড়ামারা এলাকাতেও জল জমেছে। বৈদ্যবাটী পুরসভার ৮টি ওয়ার্ডের নিচু এলাকাগুলি জলের তলায়। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজিপাড়া, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নার্সারি রোড, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধানমাঠ এলাকা, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের খড়পাড়া নিচুমাঠ, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাপবাগ এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পম্পানগর এলাকায় জমা জলে দুর্ভোগ বেড়েছে। বৈদ্যবাটী পুরসভা স্যানিটারি ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘‘অপরিকল্পিত ভাবে নতুন বসতি গড়ে উঠেছে। জল জমার সমস্যা প্রতিবার হয়। বর্ষার আগেই দিল্লি রোড লাগোয়া নয়ানজুলি পরিষ্কার করা হয়েছে।’’

আরামবাগ শহরের নিকাশি ব্যবস্থাও কোনও উন্নতি হয়নি। আধ ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হলেই পুরসভার ১৯টি ওয়ার্ডের ১৩টি জলমগ্ন হয়। পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দী মানছেন, প্রাচীন এই শহরে অপরিকল্পিত নিকাশির সব কাজ করা সম্ভব হয়নি। সব ওয়ার্ডে নিকাশি নালার প্রয়োজন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement