ঘুড়ি ওড়ানোর উপর নজরদারি করতে এসে কুপোকাত পুলিশের ড্রোন। —নিজস্ব চিত্র।
ঘুড়ির প্যাঁচে কুপোকাত হল পুলিশের ড্রোন। শ্রীরামপুরে পৌষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর ‘প্রতিযোগিতা’য় নজরদারি করতে গিয়ে হয়ে গেল ‘ক্ষতি’।
পৌঁষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ পুরনো। সোমবার হুগলির নানা প্রান্তে আকাশ ছিল ঘুড়িময়। সকাল থেকে আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। তবুও ঘুড়ি নিয়ে অপেক্ষায় ছিল ‘দস্যি’রা। কখন আকাশ পরিষ্কার হয়— সেই অপেক্ষায় বসতে বসতে বেলা গড়াল। অবশেষে মিঠে রোদের দেখা পেতেই শ্রীরামপুরের আকাশ ভরে গেল ‘পেটকাটি চাঁদিয়াল মোমবাতি বগ্গা’য়। অন্য দিকে, ঘুড়ি ওড়াতে নাইলন সুতো বা চিনা মাঞ্জার ব্যবহারে একের পর এক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটির তারে চিনা সুতো আটকে থেকে অনেক বিপদ ঘটেছে। দুর্ঘটনার কবলে পড়েন বাইক আরোহীরা। শ্রীরামপুর রেলব্রিজের উপর সুতো জড়িয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েক জন। তাই পৌষ সংক্রান্তিতে সতর্ক ছিল পুলিশ। ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে কোথাও চিনা সুতোর ব্যবহার হচ্ছে কি না, কেউ নিয়ম ভাঙছে কি না, তার জন্য ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছিল শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। কিন্তু সেই ড্রোনকেই প্যাঁচে ফেলে ভোকাট্টা করে দিলেন ঘুড়ি উড়িয়েরা।
শ্রীরামপুর পাঁচবাবুর বাজার, রেলব্রিজের উপর ঘুড়ির প্যাঁচ খেলা চলছিল। সেই প্যাঁচে পড়ে পুলিশের ড্রোন মুখ থুবড়ে পড়ে মাটিতে। তাই নিয়ে দেখা গোল হুড়োহুড়ি। ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলেন বাবলু যাদব নামে এক যুবক। তাঁর কথায়, ‘‘পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে আমরা প্রতি বছর ঘুড়ি ওড়াই। আমরা কিন্তু ‘কটন সুতো’ ব্যবহার করি। তবে অনেকেই আছেন, যারা চিনা মাঞ্জার সুতো ব্যবহার করেন। সেখান থেকে নানা দুর্ঘটনা হয়। তাই সচেতন হওয়া জরুরি। না হলে মানুষের বিপদ হতে পারে।’’
এ নিয়ে শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর গৌরমোহন দে বলেন, ‘‘চিনা সুতোয় এর আগে শ্রীরামপুরে দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি করছিল। কয়েক জন ছেলে সেই ড্রোনকেই প্যাঁচে ফেলে দিয়েছে। আমরা চাই, মানুষ সচেতন হোন। ছোট ছেলেমেয়েরা তো জানেই না কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ। যেখানে চিনা সুতো বিক্রি হয় সেই জায়গায় পুলিশের অভিযান চালানো উচিত।’’
রবিবারই শেওড়াফুলি বাজারে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু চিনা সুতো আটক করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। নাইলন সুতো বিক্রেতাদের বিরুদ্ধেও আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।