উত্তরপাড়ার বহু জায়গায় ক্যামেরা এইভাবেই রয়েছে। কিন্তু সংযোগ বিচ্ছিন্ন। — নিজস্ব চিত্র।
বছর কয়েক আগে উত্তরপাড়া পুরসভার তরফে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে অন্তত দু’শো সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। কথা ছিল, আরও লাগানো হবে। কিন্তু, হয়নি। উল্টে, যে সব ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল, বহু ক্ষেত্রেই তার ছিঁড়ে সেগুলি অকেজো হয়ে পড়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের বালাই নেই বলে অভিযোগ। বিভিন্ন দুষ্কর্মের ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে সমস্যায় পড়ছে পুলিশ।
গত কয়েক বছরে উত্তরপাড়া শহরে লোকসংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। বেড়েছে অপরাধও। বিশেষত ফাঁকা বাড়িতে চুরি, মোবাইল হাতানোর চক্রকে বাগে আনতে পুলিশ জেরবার। পথেঘাটে ইদানীং ছিনতাইয়ের পর পর কয়েকটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, এলাকার নিরাপত্তার প্রশ্নে এবং অপরাধমূলক কাজকর্মের সুলুক-সন্ধান পেতে সিসিটিভি ফুটেজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অপরাধ রোখা এবং দুষ্কৃতীদের হদিস পেতে বহু ক্ষেত্রেই সিসি ক্যামেরা পুলিশকে বিশেষ সাহায্য করে। কিন্তু, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ না-মেলায় সেই সাহায্য পুলিশ পাচ্ছে না।
অভিযোগ, রাস্তায় ক্যামেরা চোখে পড়লেও ঝড় বা অন্য কোনও কারণে অনেকগুলির তার ছেঁড়া। ফলে, থেকেও নেই। অথচ, সেগুলি সারানো নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষ উদাসীন। বহু টাকা ব্যয়ে বসানো হয়েছিল ওই সব ক্যামেরা। সেই টাকা কার্যত জলে যেতে বসেছে।
গত সোমবার মাখলার একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের এক ছাত্র নিখোঁজ হয়ে যায়। বাড়ি থেকে বেরনোর সময় পড়শি বাড়ির সিসিটিভিতে তার ছবি ধরা পড়ে। তবে, পরবর্তী অংশে কোনও সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ পায়নি। ফলে, ওই কিশোর কোন পথে গিয়েছে, তা নিয়ে তদন্তকারীরা ধন্দে পড়েন। পরে, অন্য সূত্রে ওই কিশোরের সন্ধান মেলে।
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তার কথায়, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়, তদন্তের প্রশ্নে ততটাই দ্রুত ফল মেলে। কিন্তু, শুধু এই একটি ক্ষেত্রেই নয়, অন্য ঘটনাতেও উত্তরপাড়া শহরে পুলিশ ফুটেজ পেতে সমস্যায় পড়ছে।’’
পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘পুরসভার লাগানো ক্যামেরা একেবারে কাজ করছে না, তা নয়। তবে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্যা কিছু আছে। আরও বেশি সংখ্যায় ক্যামেরা লাগানোর যে পরিকল্পনা ছিল, তা কী ভাবে দ্রুত রূপায়ণ করা যায়, দেখব। রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সমস্যা কাটিয়ে ওঠারও চেষ্টা করছি।’’