এই ভুটভুটিতেই চলে পারাপার। নিজস্ব চিত্র
চলার কথা ছোট লঞ্চ। চলছে ঝুঁকির ভুটভুটি। হুগলির বলাগড়ের মিলনগড় এবং নদিয়ার চাকদহের মধ্যে ফেরি পারাপার এ ভাবেই চলছে। এ নিয়ে নিত্যাযাত্রীরা ক্ষুব্ধ। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়ে সরব হলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। শুক্রবার হুগলির জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বলাগড়ের বিডিও, ওসি-সহ নানা দফতরে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তিনি। ওই দিন ফেরিঘাট সরেজমিনে পরিদর্শনকরেন বিধায়ক।
ওই ফেরিঘাটের ইজারা দিয়েছে চাকদহ পঞ্চায়েত সমিতি। তার সভাপতি হরপ্রসাদ হালদার বলেন, ‘‘ফেরি পরিষেবা নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ বা আবেদন পাইনি। যাত্রীরাও বলেননি। লিখিত আবেদন পেলে ব্যনবস্থা নেব।’’ ইজারাদার কৃষ্ণ কীর্তনীয়ার দাবি, চুক্তি মেনেই ভুটভুটি চলছে।
নিত্যাযাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, ভুটভুটি একে বিপজ্জনক, তার উপরে অতিরিক্ত যাত্রী, সাইকেল-মোটরবাইক তোলা হয়। তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। অথচ, দিনের পর দিন এ ভাবেই চলছে। কয়েক বছর আগে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ায় বাঁশের অস্থায়ী জেটি দুর্ঘটনার পরে কিছুটা কড়াকড়ি হয়েছিল। অতিরিক্ত যাত্রী তোলা বন্ধ হয়েছিল। যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হচ্ছিল। সব এখন বন্ধ। এক নিত্যলযাত্রীর ক্ষোভ, ‘‘গত ১৭ নভেম্বর এক যাত্রী ভুটভুটি থেকে পড়ে মারা যান। তার পরেও প্রশাসনের কোনও নজর নেই।’’ যাত্রীদের দাবি, এই ফেরিঘাটে পরিকাঠামোর ঘাটতি আছে। প্রশাসনের তরফে তা তৈরি করা হোক। লঞ্চ চালানোর ব্যবস্থা অবিলম্বে করা হোক।
বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যা পারী জানান, এই ফেরিঘাটে বিপজ্জনক ভাবে যাত্রী পারাপারের কথা অনেক দিন ধরেই শুনছিলেন। শুক্রবার নিজে গিয়ে দেখেন, ছোট ভুটভুটি চলছে। বেশি যাত্রী তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এটা হতে পারে না। সরকার ব্য বস্থা না নিলে, বিপদ বাড়বে। তাই, বিভিন্ন দফতরে জানালাম।’’ বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পায়েল পালও বলেন, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী জলযান (ছোট লঞ্চ) চলার কথা। তার বদলে ভুটভুটিই চলছে। এসওপি (স্ট্যািন্ডার্ড অপারেটিং প্রসেস) মানা হচ্ছে না। চাকদহ পঞ্চায়েত সমিতিকে এ বিষয়ে জানালে, তারা ভ্রুক্ষেপ করছে না।’’
ইজারদার কৃষ্ণ কীর্তনীয়ার দাবি, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী জলযান বা তার সমতুল্য ভুটভুটি চালানোর কথা। তাই করা হচ্ছে। ভুটভুটি চলার কথা চাকদহ পঞ্চায়েত সমিতি জানে। ভুটভুটিতে বসার জায়গা করা আছে। কিন্তু যাত্রীরা সেখানে না বসে, যেখানে সাইকেল মোটরবাইক রাখার জায়গা রয়েছে, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। লাইফ জ্যাকেট পরার অনুরোধ করলেও যাত্রীরা শোনেন না।’’