প্রতীকী ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়েছিল মেয়ে। তাই আর তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতে নারাজ পরিবার। ‘ভাল পাত্র’ পেয়ে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চানবাবা-মা। কিন্তু বেঁকে বসে মেয়েটি। সূত্র মারফত জেলা চাইল্ড লাইনের কাছে খবর পাঠিয়ে নিজেরবিয়ে ভেস্তে দিয়েছে মেয়েটি। গত শুক্রবার তার বাড়িতে আসা চাইল্ড লাইন ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের কাছে সে আর্জি জানিয়েছে, ‘‘আর এক বার পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হোক।’’ ঘটনাটি বালির নিশ্চিন্দা সংলগ্ন একটি গ্রামের।
হাওড়া চাইল্ড লাইনের কর্মী সঞ্জয় চৌধুরীদের কাছে খবর আসে, জোর করে এক নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিন্দার কাছে এক জায়গায়। দ্রুত প্রশাসনে খবর দিয়ে তাঁরা হাজির হন মেয়েটির বাড়িতে। সঙ্গে প্রশাসনের এক আধিকারিক ছিলেন। মেয়েটি জানায়, সে বিয়ে করতে চায় না। আর এক বার পরীক্ষায় বসার সুযোগ চায় সে। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘ওই নাবালিকা জানায়, সে এ বার কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। দর্শনে অকৃতকার্য হওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করতে পারেনি। তাই তার বিয়ে দিতে চাইছেন বাবা-মা।’’ বিয়ে আটকে মেয়েটির অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছে চাইল্ড লাইন। মেয়েটিও লিখিত ভাবে জানিয়েছে, আঠারোর আগে বিয়ে করবে না। সেই সঙ্গে প্রশাসনের তরফে পাত্রপক্ষকে জানানো হয়, আঠারো পেরোনোর আগে মেয়েকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
ওই কিশোরী যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, তা দেখা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েত। নাবালিকার বাবা রাজমিস্ত্রি। মা গৃহ-সহায়িকার কাজ করেন। মেয়েটির দাদা কাজ করেন একটি দোকানে। সঞ্জয় বলেন, ‘‘যে যুবকের সঙ্গে নাবালিকার বিয়ের কথা হয়েছিল, তিনি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি করেন।’’
হাওড়া জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন মহুয়া শূররায় বলেন, ‘‘অনেক মেয়েই এ ভাবে পড়াশোনা না করে হারিয়ে যাচ্ছে। অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। মেয়েটির চেষ্টায় প্রশাসন তৎপর হয়ে বিয়ে রুখে দিয়েছে। এই তৎপরতা বজায় রাখতে হবে প্রশাসনকেও।’’