সচেতনতা প্রচার পুলিশের। বুধবার আরামবাগে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
বিপর্যয় আসছে। হুগলি জুড়ে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
হাওয়া অফিসের সতর্কবার্তা অনুযায়ী আজ, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুরী থেকে সাগরদ্বীপের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। বুধবার দুপুর থেকেই হুগলির বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। সরকারি স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। ঝুঁকি এড়াতে এ দিন বিকেল ৫টা থেকে কাল, শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত জেলার সব ফেরিঘাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। উত্তরপাড়া থেকে গুপ্তিপাড়া পর্যন্ত গঙ্গাপারের ফেরি ঘাটগুলিতে সেই বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের দাবি, ‘ডেনা’ মোকাবিলায় আপৎকালীন সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। বুধবার চার মহকুমা প্রশাসনের তরফে বৈঠক করা হয় সংশ্লিষ্ট পুরসভা, পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে। সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের বৈঠকে ‘ভার্চুয়ালি’ যোগ দেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আধিকারিক (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, বুধবার দিনভর হুগলির ১২ হাজার ২৩৭ জনকে বিপদসঙ্কুল এলাকা থেকে সরানোর কাজ চলে। পশ্চিম মেদিনীপুর লাগোয়া আরামবাগে পর্যাপ্ত সংখ্যক জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) রাখা হয়েছে।
জেলাশাসক দফতরে কেন্দ্রীয় ভাবে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল-রুম। তার নম্বর (০৩৩) ২৬৮১-২৬৫২ এবং ৭০০৩১৯০৫০৭। সেখানে ঝড়ের গতিবিধিতে ২৪ ঘণ্টা নজর রাখা চলছে। এ ছাড়াও জেলার ১৮টি ব্লক অফিস ও ১৩টি পুরসভায় স্থানীয় ভাবে কন্ট্রোল-রুম খোলা হয়েছে। গঙ্গা লাগোয়া এলাকায় সাবধানতা অবলম্বনের জন্য মাইকে প্রচার করে পুরসভা এবং ব্লক প্রশাসন। চুঁচুড়ার চকবাজারে গঙ্গার বাঁধের পারে থাকা মানুষদের সতর্ক থাকতে প্রচার চালায় পুরসভা। সেখানে কাঁচাবাড়িতে থাকা মানুষদের সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানান স্থানীয় কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাস।
সম্প্রতি জাঙ্গিপাড়াতেও বন্যা পরিস্থিতি হয়েছিল। দুর্যোগ নিয়ে মানুষকে সতর্ক করে শ্রীরামপুর মহকুমার এই ব্লকের রাজবলহাট-২ পঞ্চায়েতের তরফে মাইকে প্রচার করা হয়। উপপ্রধান তুষারকান্তি রক্ষিত জানান, পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্য, কর্মী, সুপারভাইজ়ার ও কিছু সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৈঠক হয় পঞ্চায়েতের সভাকক্ষে। আরামবাগ মহকুমার ৬টি ব্লকের ৬৩টি পঞ্চায়েতে এলাকাতেও মাইকে প্রচার চলে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মতো নড়বড়ে মাটির বাড়ি চিহ্নিত করা এবং প্রয়োজনে বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরানোর প্রস্তুতি চলছে বলে সূত্রের খবর। মহকুমাশাসক রবি কুমার জানান, বিদ্যুৎ, পূর্ত, স্বাস্থ্য, সেচ, কৃষি-সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।