টোটোর দাপট চুঁচুড়ার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকে রাত— হুগলির সদর শহর চুঁচুড়ার রাস্তায় টোটোর দাপটে যানজট, পথচারীদের দুর্ভোগের অভিযোগ নতুন নয়। ক্ষোভ জমছিলই। শুক্রবার সকালে টোটোর ধাক্কায় এক সাইকেল আরোহী মহিলা, তাঁর মেয়ে-সহ চার জনের জখম হওয়ায় সেই ক্ষোভ বাড়ল। টোটোর দাপাদাপি রুখতে পুলিশ প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগও নতুন করে উঠল।
এ দিন ঘড়ির মোড়ের কাছে এক প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রীকে সাইকেলে বসিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন মা। কিন্তু যানজটে এগোতে পারছিলেন না। হঠাৎই একটি টোটো এসে সাইকেলের সামনে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ঘটনায় মেয়েকে নিয়ে পড়ে যান ওই মহিলা। টোটোটিও উল্টে যায়। ঘটনায় ওই মা-মেয়ে এবং টোটোর দুই যাত্রীও জখম হন। পুলিশের সহযোগিতায় স্থানীয়েরা তাঁদের চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়।
শহরের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘টোটো নিয়ন্ত্রণে পুরসভার উদ্যোগ নেই। তাই পুলিশও ব্যবস্থা নেয় না।” পুরপ্রধান অমিত রায়ও কিন্তু টোটোর সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ কিংবা পরিবহণ দফতর এ বিষয়ে উদ্যোগী হলে পুরসভাপাশে থাকবে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, টোটো মূলত ছোট রাস্তার গাড়ি হলেও মফস্সলে আর তা মানা হয় না। হুগলি জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অশোক ঘোষ জানান, ২০২০ সালের পর থেকে গোটা রাজ্যেই টোটোর রেজিষ্ট্রেশন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু অবৈধ ভাবে কিছু ব্যবসায়ী বাজারে টোটো নামাচ্ছেন। ধরপাকড় যে একদমই হয় না, এমন নয়। তিনি বলেন, “একদম প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ টোটো চালান।, অনেক সময় মানবিকতার খাতিরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই সুযোগই নিচ্ছেন তাঁরা।”
এই শহরের ঘড়ির মোড় থেকে খরুয়াবাজার যাওয়ার রাস্তা অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ। সেখানে এত টোটো চলে যে যানজটে নাকাল হন আমজনতা। শুধু সদর শহরই নয়, জেলার বেশির ভাগ জায়গাতেই একই চিত্র। অবিলম্বে এই গাড়ির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও নিয়মবিধি চালু করা না হলে আগামী দিনে দুর্ঘটনা বাড়বে বলেই আশঙ্কা অনেকের। আখনবাজারের এক বাসিন্দা বলেন, “সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় রাতে, কারণ ব্যাটারি সাশ্রয়ের জন্য বেশির ভাগ টোটোর আলো বন্ধ রাখা হয়। অন্ধকারে খুব কাছে না এলে বোঝাই যায় না কোনও গাড়ি আসছে। ফলে, দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ে।”