ঝড়, বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে বাড়ির ছাদের অংশ। — নিজস্ব চিত্র।
ঝড়, বৃষ্টিতে বাড়ির ছাদের অংশ ভেঙে পড়ে মৃত্যু এক বৃদ্ধার। ঘটনাস্থল হাওড়ার কোনা। মঙ্গলবার সকালে ওই বৃদ্ধার স্বামী লক্ষ করেন বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্ত্রী। পরে লিলুয়া থানার পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, কোনার চৌধুরী পাড়ার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা অশীতিপর বীরেন্দ্রনাথ চৌধুরী। স্ত্রী সত্তরোর্ধ্ব মমতাকে নিয়ে প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো দোতলা বাড়িতে থাকতেন। দু’জনেই বয়সজনিত কারণে অসুস্থ। সোমবার সন্ধ্যার পর কালবৈশাখী শুরু হয়। ঝড়, বৃষ্টি চলেও গভীর রাত পর্যন্ত। রাতে বাড়ির দোতলায় স্বামী এবং স্ত্রী দু’টি পাশাপাশি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। মমতা যখন নিজের বিছানায় ঘুমোচ্ছিলেন, সেই সময় হঠাৎই পুরনো বাড়ির ছাদের চাঙর তাঁর মাথায় খসে পড়ে। মনে করা হচ্ছে, অসুস্থতার কারণে তিনি আর বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেননি। ঝড়, বৃষ্টির কারণে পাশের ঘরে স্বামী শুয়ে থাকলেও তাঁকে ডেকে ডেকেও হয়তো সাড়া পাননি মমতা। ওই অবস্থায় মাথা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ঘুমের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে স্বামী ঘুম থেকে উঠে দেখেন, বিছানায় টালি, ভাঙ্গা কড়িকাঠ, সুরকির স্তূপের মধ্যে মৃত অবস্থায় পড়ে স্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবর দেন মেয়েদের। তাঁদের দুই মেয়েই বিবাহিত। মেয়েরা অন্যত্র থাকেন। তাঁরা বাড়িতে চলে আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে লিলুয়া থানার পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং দমকল। তাঁরা মমতাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রিয়ঙ্কা সিংহ নামে এক প্রতিবেশী জানান, গভীর রাতে খুব জোরে কিছু ভেঙে পড়ার শব্দ তাঁরা পেয়েছিলেন। কিন্তু এই ঘটনা ঘটেছে তা কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। সকালে সব জানতে পারেন।
পুলিশ এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। দমকল আধিকারিক রঞ্জন ঘোষ জানান, বহু পুরনো বাড়িটি চুন, সুরকি দিয়ে তৈরি। রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি দীর্ঘদিন। যে কারণে ঝড়, বৃষ্টির জেরে বাড়ির অংশ ভেঙে পড়ে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সোমবার রাতে ঝড়, বৃষ্টির কারণেই পুরনো বাড়ির ছাদের একটি অংশ ভেঙে পড়ে এই বিপত্তি।