জীবাণুনাশক ছড়াচ্ছেন পান্ডুয়ার একটি স্কুলের শিক্ষক। ছবি: সুশান্ত সরকার।
দু’বছর পর তারা ফিরছে স্কুলে। বিশেষ কোনও উপহার না দিলে হয়! আজ, বুধবার আরামবাগের তেলুয়া শিক্ষা সদন তাই কচিকাঁচাদের জন্য বেলুনে সাজাচ্ছে স্কুলবাড়ি। আর মিড ডে মিলে থাকছে গোটা ডিম আর পায়েস।
এমন ব্যবস্থা অবশ্য শুধু আরামবাগের স্কুলেই নয়। হুগলির প্রায় প্রতিটি প্রাথমিক স্কুলই খুদেদের জন্য সেজে উঠেছে নতুন করে।
হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর, জেলায় মোট ২৯৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ২ লক্ষ ৬৫ হাজার। বেশির ভাগ স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। কোথাও কোথাও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে। সব স্কুলেই প্রস্তুতি চূড়ান্ত। স্কুল খোলায় পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক—খুশি সকলেই।
স্কুলের পরিচ্ছন্নতা প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গোপাল রায় বলেন, ‘‘বিডিও দফতর ও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ প্রকল্পের সময় থেকেই স্কুল জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছিল। মঙ্গলবার ফের স্কুল পরিষ্কার করা হয়েছে। শিক্ষকদের বলা হয়েছে, করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়ুয়াদের দূরত্ব রেখে বসাতে। পড়ুয়া বেশি থাকলে দু’ভাগে বসাতে বলা হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘গত
বন্যায় খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহু প্রাথমিক স্কুলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়। সব স্কুল মেরামত করা যায়নি। ওই সব স্কুল দ্রুত সারানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’
সংসদের চেয়ারপার্সন তথা জেলা পরিষদের সদস্য শিল্পা নন্দীও বলেন, ‘‘পাড়ায় শিক্ষালয়ে মিড-ডে মিলে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছিল। ফলে, স্কুলগুলির রান্নাঘর পরিষ্কার রয়েছে।’’
মঙ্গলবার বৈদ্যবাটী উত্তরপাড়া প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে স্কুল ভবন পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্তকরণ চলছিল পুরোদমে। ৪৪৪ জন পড়ুয়া রয়েছে
এই স্কুলে। প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন
সিকদার বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ছাড়াও শৌচালয় ও পানীয় জলের পরিকাঠামো আমরা দেখে নিয়েছি। করোনা-বিধি মেনে যাতে সঠিকভাবে স্কুলে পঠন-পাঠন করা যায় তার সব
প্রস্তুতি সারা।’’
মঙ্গলবার সকাল থেকে আরামবাগের প্রায় সব স্কুলেই শ্রেণিকক্ষ, শৌচাগার, রান্নাঘরের শেড, পানীয় জল, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে জীবাণুমুক্ত করা হয়। আরামবাগের তেলুয়া শিক্ষা সদনের প্রধান শিক্ষক কুন্তল ঘোষাল বলেন, “ফুল আর বেলুন দিয়ে স্কুল সাজানো হয়েছে। মিড ডে মিলে রাখছি গোটা ডিম এবং পায়েস।” তিনি জানান, স্কুল পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করছেন রান্নার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাই।
জেলার মিড ডে মিল দায়িত্বে থাকা (ওসি) নীলিমা সামন্ত বলেন, “স্কুলের পরিকাঠামো সংক্রান্ত নতুন কোনও অভিযোগ নেই। যে সব অভিযোগ এসেছিল, গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেই সেই কাজ হয়ে গিয়েছে। নতুন কিছু থাকলে আমরা জানাতে বলেছি।’’
তথ্য সহায়তা: প্রকাশ পাল