বিভাস মালিক। —নিজস্ব চিত্র।
বছর দুয়েক আগে খানাকুলের এক তৃণমূল কর্মীকে খুনে অভিযুক্ত ছিলেন দলেরই নেতা বিভাস মালিক। তবে দল ছেড়ে কর্মীদের নিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তাঁর হাত ধরেই মাথা মুড়িয়ে শাসকদলে যোগ দিলেন খানাকুলের কয়েক জন বিজেপি কর্মী। খুনে অভিযুক্ত ওই নেতা বিভাসের দাবি, খুনের দিন এলাকায় ছিলেন না তিনি। বিভাসের আরও দাবি, বিজেপি-তে গিয়ে ভুল করেছিলেন তাঁরা। তার প্রায়শ্চিত্ত করতেই মাথা ন্যাড়া করে তৃণমূলে ফিরেছেন কর্মীরা। যোগদান পর্ব নিয়ে ওই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক তথা আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ।
মঙ্গলবার হুগলি জেলার খানাকুলের বলপাই গ্রামে ওই যোগদান অনুষ্ঠানে দলবদলুদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ১৫ জুন খানাকুলের হরিশচকে তৃণমূল কর্মী মনোরঞ্জন পাত্রকে খুনে মূল অভিযুক্ত বিভাসের নেতৃত্বেই পুরনো দলে ফেরেন কয়েক জন কর্মী। বিভাসের দাবি, “আমার সঙ্গে অনেকেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিল। তাদের এখন অনুশোচনা হচ্ছে। তাই স্বেচ্ছায় মাথার চুল কেটে ফেলে দিয়ে তারা তৃণমূলে যোগ দিল। মনোরঞ্জন যে দিন খুন হয়, আমি ওই এলাকায় ছিলাম না। আমাকে খুনের ঘটনায় জড়ানো হয়েছিল।”
দলবদলুদের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করেছে বিজেপি। দলের বিধায়ক বিমান বলেন, “যারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে এসেছিল, তাদেরই কয়েক জন ফিরে গিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেই খুনের মামলা করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের কোনও নীতি-আদর্শ বলে কিছু নেই।”
এই যোগদান পর্বে জেলা নেতৃত্বের হাত নেই বলে দাবি তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের। তাঁর কথায়, “কাদের দলে নেওয়া হবে, তা রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করেন। এতে জেলার কোনও হাত নেই।” বিভাসের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে দলে কী ভাবে নেওয়া হল? এ প্রশ্নে দিলীপের নির্বিকার জবাব, “বিভাসকে দলে নেওয়ার বিষয়টি আমার হাতে নেই। আমি জেলা নেতৃত্বকে সুপারিশ করতে পারি। তাকে নেবে কি না, তা রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবেন।” তৃণমূলে ফেরার জন্য় কি মস্তক মুণ্ডন করতে হবে? দিলীপের মন্তব্য, “যারা তৃণমূল করবে, তাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে চলতে হবে। সাংগঠনিক পরিকাঠামোকে মেনে চলতে হবে।”