বাগনান মুম্বাই রোডে মানকুর উড়ালপুলের কাছে মুম্বই রোডের কলকাতামুখী রাস্তা দুই লেনই রয়ে গিয়েছে। নিজস্ব চিত্র
এতদিনেও জমি-জট মেটেনি। ফলে, গ্রামীণ হাওড়ায় মুম্বই রোডের কিছু অংশের সম্প্রসারণের কাজ থমকেই রয়েছে। মূলত ছয় লেনের জাতীয় সড়কটি কিছু জায়গায় চার লেনের হয়েই রয়ে গিয়েছে। আর ওই সব জায়গায় দুর্ঘটনাও অব্যাহত। সমস্যা কবে মিটবে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। চিন্তায় পুলিশও। দুর্ঘটনা ঠেকাতে তাদের নাজেহাল হতে হচ্ছে।
পাঁচলার রানিহাটি থেকে কোলাঘাট সেতুর আগে পর্যন্ত গ্রামীণ হাওড়ায় মুম্বই রোডের বিস্তার প্রায় ৪৬ কিলোমিটার। ২০১১ সালে ওই সড়ক সম্প্রসারিত হয়ে বেশিরভাগ জায়গায় ছয় লেনের হলেও কিছু জায়গায় ‘লেন’-এর সংখ্যা এখনও চারই (আপ ও ডাউন মিলিয়ে) রয়ে গিয়েছে। যেমন, বাগনানের মানকুর উড়ালপুল ও কুলগাছিয়া উড়ালপুলের কাছে সড়কটি চার লেনের। একই অবস্থা কুলগাছিয়ায় শ্রীরামপুরের কাছেও। ওই সব জায়গায় কোনও ‘সার্ভিস রোড’ও নেই। ফলে, নিত্যদিন বহু মানুষকে হেঁটে বা বাইক, রিকশা ও টোটোতে দ্রুত গতির ও সড়ক ধরেই যেতে হয়। এর জেরে দুর্ঘটনা ঘটছে।
গাড়িচালকদের অভিযোগ, ছয় লেনের সড়কটি যে সব জায়গায় চার লেনের হয়ে গিয়েছে, সেখানে কোনও রকম পথ নির্দেশিকা নেই। এর জেরে বিশেষ করে রাতে গাড়ি চালাতে সমস্যা হচ্ছে। মানকুর এবং কুলগাছিয়া উড়ালপুল থেকে নেমে কলকাতামুখী সড়ক ধরে যাওয়ার সময়ে রাস্তা সভ্কীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে প্রায়ই পাশাপাশি দু’টি গাড়ির ঘষা লাগছে। অনেক ক্ষেত্রে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের নয়ানজুলিতেও উল্টে যাচ্ছে।
এক গাড়িচালক বলেন, ‘‘উড়ালপুর থেকে নামার সময়ে অনেক গাড়ির গতিই বেশি থাকে। হঠাৎ করে লেন কমে যাওয়ায় দুর্ঘটনা হয়। এই জায়গাগুলিতে কোনও পথবাতিও নেই। তাই রাতে দুর্ঘটনা বেশি হয়।’’
মানকুর উড়ালপুল থেকে কলকাতামুখী ওই সড়কের কপালিপাড়ার কাছে একটি বাঁকের মুখেই দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে বলে মানছে পুলিশও। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘মুম্বই রোডের ওই অংশটি নিয়ে বার বার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। দিনের বেলা এবং রাত ১০টা পর্যন্ত ওই জায়গায় মানুষকে রাস্তা পারাপার করানোর জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা হয়। কিন্তু সমস্যা হয় তার পরে।’’
জাতীয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে রবি মিশ্র সমস্যার কথা মানছেন। তিনি বলেন, ‘‘এখনও ওই সড়কে বেশ কয়েকটি উড়ালপুল ও আন্ডারপাস তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু কিছু জায়গায় জমি-জট থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। মানুষের সমস্যা হচ্ছে এবং দুর্ঘটনাও হচ্ছে, ঠিক কথা। চেষ্টা করা হচ্ছে জমি-জট মেটানোর। তারপরেই সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে এবং যেখানে আলো লাগানো বাকি আছে, সম্পন্ন করা হবে।’’