পুড়িয়ে দেওয়া আমবাগান। নিজস্ব চিত্র
বছর পাঁচেক আগে ভদ্রেশ্বরের গর্জি এলাকায় দিল্লি রোড লাগোয়া জে সি খান রোডের ধারে বিঘে পাঁচেক জমিতে আমগাছের চারা বসিয়েছিল একটি পরিবার। এ বার প্রথম ফল ধরেছিল। কিন্তু, প্রায় ৩০০ আমগাছ আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
গত রবিবার রাতের ওই ঘটনায় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে পাঁচ দিন পরে, শনিবার সন্ধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়েছে। ঘটনার পিছনে কে বা কারা রয়েছে, কী উদ্দেশ্যে অত গাছ জ্বালিয়ে দেওয়া হল, জমি মাফিয়া চক্র আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ক’দিন কেন অভিযোগ দায়ের হল না, সেটাও প্রশ্ন।
জায়গাটি চন্দননগর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই বাগানের মালিক স্থানীয় ছোট গর্জির বাসিন্দা সরোজ হালদার ও রামচন্দ্র হালদার নামে ষাটোর্ধ্ব দুই ভাই। সরোজ অবশ্য কর্মসূত্রে জলপাইগুড়িতে থাকেন। শনিবার ফিরেছেন। এ দিন বিকেলে জমিতে দাঁড়িয়ে তাঁর দাবি, গাছ পুড়িয়ে দেওয়ার লিখিত অভিযোগ করতে দাদা রামচন্দ্র গত সোমবার থানায় গিয়েছিলেন। পুলিশ ডায়েরি নেয়নি। মৌখিক জানানো হয়। সন্ধ্যায় থানায় যাবেন বলে তিনি জানান।
এ নিয়ে ভদ্রেশ্বর থানায় খোঁজ নেওয়া হলে পুলিশ ওই দাবি উড়িয়ে জানায়, বিষয়টি তারা জানেই না। রামচন্দ্র সোমবার থানায় এসেছিলেন জমি সংক্রান্ত বিচারাধীন একটি মামলার বিষয়ে কথা বলতে। গাছ পুড়ে গিয়েছে, এমন কোনও কথা বলেননি বা লিখিত ভাবেও জানাননি। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সন্ধ্যায় জানা যায়, থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
সরোজের বক্তব্য, ভালই ফলন হয়েছিল। এই গাছে বছরে দু’বার আম ফলে। কয়েক বছরের মধ্যে বছরে আট লক্ষ টাকার আম পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তা আর হবে না। বহু টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। এলাকায় তাঁদের সঙ্গে কারও বিরোধিতা নেই, দাবি করে সরোজের অভিযোগ, ‘‘জমি কম দামে বেচার জন্য জমি-মাফিয়ারা চাপ সৃষ্টি করেছিল। জমিতে যাওয়ার পথ আটকে দিয়েছিল। তবে, এই ক্ষতি কারা করল, নির্দিষ্ট ভাবে বুঝে উঠতে পারছি না। পুলিশ দেখুক।’’
এলাকাবাসীও চাইছেন, পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। স্থানীয় এক যুবকের কথায়, ‘‘আগুন যে লাগানো হয়েছে, স্পষ্ট। প্রশাসন নড়ে না বসলে এ ভাবে আরও জমির ক্ষতি করা হতে পারে।’’