উলুবেড়িয়ার শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলছেন শশী পাঁজা। ছবি: সুব্রত জানা
রাজ্যের নয়া শিল্পমন্ত্রী হিসেবে তিনি শপথ নিয়েছেন গত বুধবার। একদিন পরে, শুক্রবার হাওড়ার দু’টি শিল্পতালুক পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন কারখানার প্রতিনিধিদের শিল্প পরিচালনায় সমস্যা সমাধানে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে গেলেন শশী পাঁজা।
অনেকে মনে করছেন, নয়া শিল্পমন্ত্রীর এই উদ্যোগ সরকারের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা। তৃতীয় দফায় রাজ্যে ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পায়নে জোর দিয়েছেন। কিন্তু এসএসসি-দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি ধাক্কা খায়। গ্রেফতার হওয়ার সময়ে পার্থই ছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী (প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী)। পার্থবাবুকে দল এবং সরকার থেকে ছেঁটে ফেলা হলেও এখনও সমালোচনা চলছে নানা স্তরে। মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় রদবদলের পরেও তা থামেনি।
তাই, শুক্রবার হাওড়ায় এসে শিল্পমন্ত্রী যে ভাবে শিল্প-কারখানা পরিচালনায় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে। এ দিন প্রথমে সাঁকরাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে যান শশী পাঁজা। তারপরে উলুবেড়িয়া শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে। দু’জায়গাতেই বিভিন্ন কারখানার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন শিল্পমন্ত্রী। তিনি জানতে চান, শিল্প চালাতে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে?
দু’জায়গাতেই কারখানার কর্তারা মূলত নিকাশি সমস্যা নিয়ে সরব হন। উলুবেড়িয়া শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের অফিসে গিয়েছিলেন শিল্পমন্ত্রী। বাম আমলে গড়ে ওঠা এই কেন্দ্রে আইটিসি, পেপসি-সহ নামী-দামি ৬৮টি সংস্থার কারখানা আছে। যার মধ্যে ২৪টি বন্ধ।
আইটিসি দেশের অন্যতম বড় কর্পোরেট সংস্থা, যার সদর দফতর রয়েছে কলকাতায়। সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজার নির্মল চট্টোপাধ্যায় এবং কারখানার ম্যানেজার পার্থ ভট্টাচার্য শিল্পমন্ত্রীকে জানান, বর্ষায় কারখানার আশপাশে এবং কারখানার মধ্যে জল জমে যায়। ফলে, কারখানার স্বাভাবিক কাজকর্মে অসুবিধা হয়। পেপসি কারখানার ম্যানেজার বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়া শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের রাস্তায় রাতে আলো জ্বলে না। ফলে, নিরাপত্তার অভাব আছে। কেন্দ্রে সরকারি ভাবে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই। রাতে পুলিশের নজরদারিও থাকে না।’’ একটি স্টিল কারখানার ম্যানেজার বলেন, ‘উলুবেড়িয়া শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের মুম্বই রোডের দিকে মূল প্রবেশদ্বারকে বড় করতে হবে। না হলে কারখানায় বড় ট্রাক ঢুকতে পারছে না। উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে।’’
শিল্পমন্ত্রী যাবতীয় সমস্যা শোনেন এবং লিপিবদ্ধ করেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘শিল্পমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর আপনাদের সঙ্গে কথা বললাম। আমাদের সরকার শিল্প-বান্ধব। আপনাদের সমস্যা অতি দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলব। সুষ্ঠু ভাবে কারখানা চালানোর জন্য সব বিষয় সরকার দেখবে।’’
সাঁকরাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রায় ৯০টি কারখানা আছে। এর মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার কারণে সাতটি বন্ধ। শিল্পমন্ত্রী জানান, এগুলোর বিষয়ে সরকার কিছু করতে পারবে না।