Water Project at Arambagh

চার লেনের রাস্তা আরামবাগে, কোতরংয়ে জলপ্রকল্প

পুরশুড়ার সোদপুর বাজার এবং আরামবাগের মায়াপুর থেকে খামারবেড় মিলিয়ে মোট ৪ কিমির কাজ জমি-জটিলতায় আটকে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী , গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

আরামবাগ, উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:০২
Share:

আরামবাগ -চাঁপাডাঙা - পুরশুড়া চার লেন রাজ্য সড়ক (বাঁ দিকে), উত্তরপাড়ায় চালু হল জলপ্রকল্প (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

সঙ্কীর্ণ রাজ্য সড়কটিতে যানজট আর দুর্ঘটনা ছিল নিত্যদিনের চিত্র। সেই রাস্তার আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার অংশের মধ্যে ১৬ কিমি এখন দুই থেকে সম্প্রসারিত হয়ে চার লেনের হয়ে গতিশীল হল। সোমবার আরামবাগের কালীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ঝাঁ-চকচকে রাস্তাটির উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘খুব বড় কাজ করে দিয়েছি।’’

Advertisement

কাজটি ‘বড়’ বলেই মানেন আরামবাগ মহকুমা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার মানুষ। তবে, পুরশুড়ার সোদপুর বাজার এবং আরামবাগের মায়াপুর থেকে খামারবেড় মিলিয়ে মোট ৪ কিমির কাজ জমি-জটিলতায় আটকে। রাজ্য সড়ক উন্নয়ন নিগমের জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সোদপুরে কিছু জমি কিনতে হবে। প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জমি কেনা হলেই কাজ হবে। মায়াপুরের অংশ দ্বিতীয় পর্যায়ে হবে।’’ তবে, বিকল্প কোনও রাস্তা বা বাইপাস না হলে এই সম্প্রসারণে আরামবাগ শহরের যানজট পুরোপুরি কাটবে কি না, সংশয়ে মানুষ।

রাস্তাটি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাঝে আরামবাগ। এক দিকে কলকাতা এবং তারকেশ্বর। অন্য দিকে দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা এবং বর্ধমানের একটা অংশের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই রাস্তা। জেলাগুলির যানবাহন এবং মূলত কৃষিপণ্য সরবরাহের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।’’

Advertisement

পূর্ত দফতরের হিসাব, এই সড়কে প্রতিদিন ১৮-২০ হাজার গাড়ি চলে। সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ফেব্রয়ারিতে। রাস্তাটি ১৭ মিটার চওড়া হয়েছে। তিনটি সেতু, একটি উড়ালপুল, দু’টি আন্ডারপাস হয়েছে। প্রকল্পে ধার্য খরচ ৬১০ কোটি টাকা। গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৪৮৭ কোটি।

এ দিন বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় আরামবাগ মহকুমায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে বিভিন্ন কাজেরও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের জন্য নিম্ন দামোদর অববাহিকায় ২৭০০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি। হুগলির দামোদর নদ ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ তৈরি ও সুদৃঢ় করতে ৬৭২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল।’’

সেচ দফতর সূত্রে খবর, দামোদরের বাঁ দিকের বাঁধের ৩৯.২০ কিমি আমূল সংস্কার হয়েছে। মুণ্ডেশ্বরীতে বর্ধমানের সীমানা বেগুয়াহানা থেকে দু’দফায় খানাকুলের মাড়োখানার রূপানারায়ণ নদের মুখ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ কিমি পলি তোলা হয়েছে। মুণ্ডেশ্বরীর শাখা খালে পলি তোলা হয়েছে।

এ দিন প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিল্যান্যাস করা হল বলেও জানিয়েছেন। উদ্বোধন হওয়া কাজের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গুরে স্মৃতি সৌধ। মমতা জানান, সিঙ্গুরে জমি নিয়ে আন্দোলনকারী কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে জয়স্তম্ভ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকা। তাঁর জীবনের অনেক আন্দোলনের মধ্যে সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রাম যে বিশেষ, জানাতে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী।

উত্তরপাড়ার কোতরংয়ে দশ একর জমির উপরে ১৫৫৬ কোটি টাকায় তৈরি জল প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোতরংয়ে উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব, কেএমডিএ, পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা ছিলেন। এখানে দৈনিক ৫৫ মিলিয়ন গ্যালন জল পরিশোধন করা যাবে। সাতটি পুরসভা ও ছ’টি পঞ্চায়েতের প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। এই জল শোধনাগার টালার থেকে ৬ গুণ বেশি শক্তিশালী, দাবি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ৬০টি ওভারহেড ট্যাঙ্ক এবং মাটির নীচে সাতটি রিজার্ভার রয়েছে। গঙ্গায় ভাসমান একটি জেটি তৈরিকরা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement