অনাদরে: এ ভাবেই দাঁড়িয়ে মাহেশের রথ। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের টাকায় আমূল সংস্কার হয়েছে মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের। জিটি রোডের উপরে তোরণ হয়েছে। কিন্তু, পাশেই যথারীতি অনাদরে দাঁড়িয়ে বিখ্যাত রথ। ভক্তদের অনুযোগ, রথের দেখভাল যথাযথ ভাবে হয় না। শুধুমাত্র রথযাত্রার সময় এলে রথ সাজানো হয়। বাকি সময় রোদ-জলে নষ্ট হয় রথের কাঠ। বিবর্ণ হয় রথের চেহারা। এই পরিস্থিতিতে সারা বছর রথের দেখভালের উদ্যোগ শুরু হল।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে জগন্নাথ মন্দিরে আলোচনা হয়। সেখানে শ্যামবাজার বসু পরিবারের (ওই পরিবারের পূর্বপুরুষ কৃষ্ণচন্দ্র বর্তমান রথটি গড়ে দিয়েছিলেন) দুই সদস্য, মন্দির কর্তৃপক্ষ বাদেও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এক কর্মকর্তা ছিলেন। জগন্নাথ মন্দিরের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানান, রথ সংস্কার এবং দেখভালে অনেক খরচ। সেই খরচ বহনে ওই ক্লাবকর্তা এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তা এগিয়ে এসেছেন। রথ সংস্কারে তাঁদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কমিটিতে শ্যামবাজার বসু পরিবারের সদস্য বিশ্বজিৎ বসুর পাশাপাশি মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী এবং অসীম পণ্ডিতও থাকবেন।
প্রতি বছর রথযাত্রার আগে রথের কাঠ পাল্টাতে হয়। পিয়াল-সৌমেনবাবুর দাবি, এ জন্য প্রায় ৩-৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়। এত দিন শ্যামবাজারের বসু পরিবারই রথের রক্ষণাবেক্ষণ করে এসেছে। কিন্তু এখন তারা পুরো খরচ বহন করতে পারছে না। সেই কারণেই নতুন কমিটি গড়ে রথের দেখভালের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পিয়াল বলেন, ‘‘ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিয়ে রথের কাঠ পাল্টানো হবে। রোদ-জল থেকে বাঁচাতে রথ ঢাকা দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় রথ সংস্কারের ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু, প্রযুক্তিগত কিছু কারণে ওই কাজ হয়ে ওঠেনি। এ বার স্পনসর এগিয়ে আসায় আমরাই এই কাজ ভাল ভাবে করতে পারব।’’ কয়েক বছর আগে টিনের ছাউনি দিয়ে রথ ঢাকা হয়েছিল। কিন্তু ওই ছাউনি টেকসই হয়নি। সেই কারণেই এ বার স্থায়ী এবং পাকাপোক্ত ভাবে রথ ঢাকা দেওয়ার ভাবনা।
আগামী জুলাই মাসের গোড়ায় রথযাত্রা। মন্দির কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, উল্টোরথের পরেই রথ ঢাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।