উলুবেড়িয়ার যদুরবেড়িয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে চলছে মাধ্যমিকের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
গতবারের থেকে অনেক কম পরীক্ষার্থী নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থী কমেছে দুই জেলাতেও (হাওড়া ও হুগলি)। পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দুই জেলার শিক্ষা দফতর এবং প্রশাসন জানিয়েছে। মাধ্যমিকের দিনগুলিতে সব বাস ও মিনিবাস চালু রাখার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ‘অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’।
হাওড়া জেলা পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার সময়ে পুলিশের পদস্থ কর্তারা রাস্তায় থাকবেন। পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে যাতে ১৪৪ ধারা অমান্য করে জমায়েত না হয়, পরীক্ষা শুরু এবং শেষ হওয়ার আগে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে যাতে যানজট না হয় সেটাও সুনিশ্চিত করবে পুলিশ। পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে কোনও পরীক্ষার্থী যাতে সমস্যায় না পড়ে, সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় থাকছে ‘ট্রাফিক হেল্প ডেস্ক’।
বাছাই করা পরীক্ষাকেন্দ্রে সিসিক্যামেরা বসানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয়কুমার পাল। এমনিতেই স্কুলে অশিক্ষক কর্মী বাড়ন্ত। তার উপরে সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে বহু ‘গ্রুপ ডি’ কর্মীর। যে সব স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে, সেখানে এর ফলে পরীক্ষা চালাতে অসুবিধা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্নে জেলা স্কুল পরিদর্শক বলেন, ‘‘বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনও অসুবিধা হবে না।’’
কেন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম?
জেলা স্কুল পরিদর্শকের দাবি, ‘‘২০১৭ সালে শিক্ষা দফতর নিয়ম করে, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির বয়স হতে হবে কম করে দশ বছর। তার আগে দশ বছরের নীচে যাদের বয়স, তারাও পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারত। সেই নিয়মের ফেরে ২০১৭ সালে দশ বছরের নীচে যাদের বয়স ছিল তাদের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি বাতিল হয়। ২০১৭-র ব্যাচই এ বার মাধ্যমিক দিচ্ছে। ফলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে।’’ একই কথা জানান শসাটি নহলা অবিনাশ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজেশ দেড়িয়া সহ একাধিক প্রধান শিক্ষক।
লক ডাউনের সময় অনেক পড়ুয়া স্কুলছুট হয়ে পড়েছিল। তারা নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করিয়েও আর মাধ্যমিকে বসছে না বলে জানিয়েছেন দুই জেলার অনেক শিক্ষক।
হুগলি জেলা মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক দেবাশিস বসু বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীরা নিজেদের মেধা অনুযায়ী ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দিক। আর কিছু নিয়ে তাদের ভাবতে হবে না। রাস্তায় পর্যাপ্ত যানবাহন পাওয়া থেকে সামগ্রিক ব্যবস্থা পুরোপুরি প্রস্তুত।’’
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরীক্ষাকেন্দ্র, তার বাইরে পুলিশের তীক্ষ্ণ নজর থাকবে। কেউ টুকলি সরবরাহের চেষ্টা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাড়িতে, মোটরবাইকে পুলিশ টহল দেবে।’’ হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, পুলিশের তরফে অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হবে, যাতে কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। রাস্তায় যানজট যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। যানবাহনের অভাব হবে না।
হরিপালের জামাইবাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে গড়ে ভর্তি হয় ৯০-১০০ জন। ’১৭ সালে হয়েছিল ৪৯ জন। এ বার পরীক্ষা দিচ্ছে ৩৭ জন। বাকি ১২ জনের মধ্যে ৮ জন ছাত্রের প্রত্যেকেই কাজ করছে শুনেছি। চার ছাত্রীও পরীক্ষা দিচ্ছে না।’’