এ ভাবেই বোজানো হচ্ছে জলাশয়। ছবি: দীপঙ্কর দে
পাম্প দিয়ে জল বের করে, বালি ফেলে বড় একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে হুগলির ডানকুনিতে। এলাকাবাসীর দাবি, মানুষের চোখের আড়াল করতে চৌহদ্দি টিন দিয়ে ঘিরে চলছে ওই বেআইনি কাজ। প্রতিবাদ করে পুরসভায় অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অনুসন্ধান করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সূর্য সেন কলোনিতে অন্তত পাঁচ বিঘে আয়তনের ওই পুকুরের জল অনেকটাই বের করে দেওয়া হয়েছে। যে অংশ ভরাটের পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেটি টিন দিয়ে ঘিরে বালি ফেলা হচ্ছিল। দিন কয়েক আগে বিষয়টি নজরে আসতেই স্থানীয়েরা প্রতিবাদ করেন। বালি ফেলা বন্ধকরা হয়।
উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ রাহা বলেন, ‘‘জলাশয় রক্ষায় যা করার, আইনি পথে পুরসভা করবে। বিভাগীয় বাস্তুকারকে সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ জলাশয়ের মালিক অবশ্য সেটি বোজানোয় অন্যায় কিছু দেখছেন না। তাঁর যুক্তি, খাতায়-কলমেজমিটি জলাশয় নয়। তাই, ভরাট করা যেতে পারে।
ওই জলাশয়ের অদূরে রেলের যন্ত্রাংশ নির্মাণের কারখানা। ওই জলাশয়ের সঙ্গে আরও বেশ কয়েক একর জুড়ে রেলের জলাভূমি ছিল। তার পাড়ে প্রায় দেড়শো ঘর বসতি ছিল। কারখানার প্রয়োজনে দেড় দশক আগে ওই জলাভূমির একাংশ ভরাট করা হয়। পরিবারগুলিকে পাশেই পুর্নবাসন দেওয়া হয়। এলাকাবাসীর দাবি, নিকাশি থেকে মাছ চাষ, পুজো-পার্বণে পুকুরটি তাঁদের ভরসা। আশপাশে আগুন লাগলে দমকলেরও ভরসা।
পুকুর পাড়ের বাসিন্দা অঞ্জন সাহা বলেন, ‘‘নিকটজনের চিকিৎসার কথা বলে পুকুরটি বুজিয়ে প্লট করে বিক্রির চেষ্টা করছেন মালিক। এলাকাবাসী হিসাবে আমরা এই বেআইনি কাজ করতে দিতে পারি না। পুরসভা নিশ্চয়ই আমাদের আবেদনে সাড়া দেবে।’’
টিন দিয়ে ঘিরে পুকুরের একাংশ বোজানোর কথা অস্বীকার করেননি মালিক রবীন ধারা। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি কাগজে এই জমি জলাশয় নয়। শালী জমি। জমিটি নিচু। এলাকার মানুষ মাটি কেটে পুকুর বানিয়েছেন। চিকিৎসার খরচের প্রয়োজনে আমার জমি আমি উঁচু করে ভরাট করা শুরু করি। স্থানীয় মানুষের আপত্তিতেকাজ বন্ধ রেখেছি। পুর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব।’’