এই রাস্তা নিয়েই ক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
বহু ক্ষোভ-বিক্ষোভের পরে কাজে হাত পড়েছিল পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে। কিন্তু কাজ এগোয়নি। বরং দিল্লি রোডের গুমোডাঙা থেকে রিষড়া স্টেশনের সংযোগকারী রাস্তার দশা আরও খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ। বাড়ছে ক্ষোভ।
রিষড়া পঞ্চায়েত এলাকার ওই রাস্তা জেলা পরিষদ দেখভাল করে। জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, অন্তত বছর আগে রাস্তাটি সংস্কারে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। ওই কাজে প্রথম বার দরপত্রে কোনও আবেদন জমা পড়েনি। নথিপত্র জাল থাকায় দ্বিতীয় বার দরপত্র পাওয়া সংস্থাকে বাতিল করা হয়। তৃতীয় বার দরপত্র হয়। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। জেলা পরিষদের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিজন বেসরা বলেন, ‘‘ওই কাজ কোন পর্যায়ে আছে, খোঁজ নেব। সেই অনুযায়ী তদারকি করব।’’
রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার এলাকাবাসী বিক্ষোভ দেখান। জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থলে যান। পঞ্চায়েতের লোকজনের পাশাপাশি তাঁদেরও ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। শুক্রবার পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দিয়েছে এসইউসি। দিন কয়েক আগে কংগ্রেস অবরোধ করে।
রিষড়া স্টেশন থেকে রাস্তার প্রায় দু’কিলোমিটার অংশ রিষড়া পুরসভা এলাকায়। সেটি ঢালাই। সমস্যা ওই অংশের পরে রিষড়া পঞ্চায়েতের পঞ্চাননতলা থেকে গুমোডাঙা পর্যন্ত অন্তত ৩ কিলোমিটার অংশে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখানে রাস্তার কিছুটা অংশ পিচ, কিছুটা ঢালাই ছিল। সে সব উঠে এখন বহু জায়গায় গর্ত। তাতে বৃষ্টির জল জমে পরিস্থিতি আরও খারাপ। কোথাও কাদা। এই রাস্তায় অটো-টোটো চলে। কল-কারখানার ভারী ভারী ট্রাক যাতায়াত করে।
রাস্তার পাশে স্কুল, পঞ্চায়েত অফিস। ছাত্রছাত্রী থেকে সকলেই বেকায়দায় পড়ছেন। অসুবিধা বেশি বয়স্কদের। কংগ্রেস নেতা শেখ রশিদ এবং সাবির আলি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের মুখে মানুষকে ভুল বোঝাতে জেসিপি যন্ত্র এনে খানিক খোঁড়াখুড়ি করে ঝামা ফেলা হল। স্রেফ প্রতিশ্রুতি দিয়েই লোকসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েত ভোট পেরিয়ে যাচ্ছে।’’ এসইউসির জেলা কমিটির সদস্য শিমূল বর্মণ বলেন, ‘‘রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য। সাধারণ মানুষ বার বার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। অথচ, সংস্কার করা হয়নি। কেন হচ্ছে না, সেটাই প্রশ্ন।’’
সমস্যা মানছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। উপপ্রধান সাহাদাত হোসেন আনসারির বক্তব্য, ‘‘সত্যিই মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। রাস্তাটি জেলা পরিষদের। কাজ কেন হচ্ছে না, আমাদের বিষয় নয়। যত দূর জানি, ঠিকাদার ভোগাচ্ছেন। অথচ, জনগণের ঝামেলা আমাদের পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি বিডিওকে লিখিত ভাবে জানানো হচ্ছে পঞ্চায়েতের তরফে।’’
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে দাবি ওঠে, উপপ্রধান নিজেই ওই কাজের ঠিকাদার। উপপ্রধানের দাবি, তিনি ঠিকাদারি করেন না। ঠিকাদার সংস্থার অনুরোধে তাঁর পরিচিত এক জন শ্রমিক সরবরাহ করছিলেন। কিন্তু ঠিকাদার মালপত্র না-দেওয়ায় শ্রমিকেরা কাজ করবেন কী করে! তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারদের জানিয়ে দিয়েছি, আমার পরিচিত ওই ব্যক্তি শ্রমিক সরবরাহের কাজে আর থাকবেন না। ঠিকাদার সংস্থাই ব্যবস্থা করুক।’’ সাবিরের বক্তব্য, ‘‘ঠিকাদার ভোগালে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?’’