প্লাবিত খানাকুল। নিজস্ব চিত্র।
জলমগ্ন খানাকুলে ত্রাণসামগ্রীর জন্য চলছে হাহাকার। হুগলি জেলার আরামবাগে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও খানাকুলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখনও জলের তলায়। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শুধুমাত্র খানাকুলই নয়, হুগলির ১২টি ব্লকের ৯টিই পুরসভার বাসিন্দারা জলবন্দি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, খানাকুলের সাজুর ঘাটের উত্তর এবং পশ্চিম দিকে নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হরিশচক, কবিরাজচক-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। তেঁতুলিয়া এলাকায় জলের তোড়ে ভেঙেছে ঘরবাড়ি। চক্রপুর, উদয়পুর এবং কুমারহাট এলাকার পরিস্থিতিও ভয়াবহ। ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এখনও পর্যন্ত ত্রাণসামগ্রী পাননি তাঁরা। কুমারহাটের বাসিন্দা বিশ্বনাথ পণ্ডিত বলেন, ‘‘তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। সব ডুবে গেল। রাস্তায় থাকতে হচ্ছে। এখন কী করব জানি না।’’ আর এক বাসিন্দা শেখ মণিরুল ইসলামের দাবি, ‘‘বন্যার জলে বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এখনও ত্রাণ পাইনি। প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে হুগলিতে ২১৫টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০ জনের মধ্যে ১ লক্ষ ২৭০ জনকে উদ্ধার করে তাতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে জেলায়।
খানাকুলের এই পরিস্থিতির মধ্যেই এক অন্তঃসত্ত্বাকে স্পিড বোটে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করল স্থানীয় প্রশাসন-সহ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। রবিবার সকালে নবাসন গ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয়া দোলুইয়ের প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়। খবর পেয়ে প়ঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন এগিয়ে আসে। স্পিড বোট নিয়ে গ্রামে হাজির হয় এনডিআরএফ। প্রসূতিকে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত পৌঁছে দেন তাঁরা। এর পর খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আপাতত সুস্থ রয়েছেন সুপ্রিয়া।