কলুপুকুর গড়েরধারের জগদ্ধাত্রী পুজো মন্ডপের সেই বিগ্রহ। —নিজস্ব চিত্র।
মূর্তির ১০ হাতে ছুরি, কাঁচি, বই, খুন্তি, তুলি! গলায় ঝুলছে স্টেথোস্কোপ। পরনে সাদা ডাক্তারি অ্যাপ্রন। চন্দননগরের কলুপুকুর মণ্ডপের সামনে বসানো ১০ হাতের মূর্তি দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদেই মণ্ডপকে সাজিয়েছেন আয়োজকেরা? যদিও ওই বারোয়ারির দাবি, এর সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডের কোনও সম্পর্ক নেই। নারীশক্তির প্রতি সম্মান জানাতেই এমন ভাবনা।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তিন মাস পার হয়েছে। এই তিন মাসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ হয়েছে নানা ভাবে। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি, অনশন থেকে রাস্তায় মিছিল, ধর্নায় বসে প্রতিবাদ। সেখানে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও ছিল প্রবল ভাবে। উৎসবের মরসুমে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ দেখেছে বাংলা। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় এমন মণ্ডপ ও প্রতিমা দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন, প্রতিবাদের সেই আঁচ এ বার পড়েছে সেখানে।
চন্দননগর কলুপুকুরগড়ের ধারের পুজো এ বার ৩৬ বর্ষে পড়েছে। বারোয়ারির তরফে জানানো হয়েছে, এ বারের পুজোয় তাদের ভাবনা নারীশক্তিকে সম্মান জানানো। বারোয়ারির এক কর্তার কথায়, ‘‘এক জন নারী কী না পারেন! শ্রমিক থেকে ঘরকন্না, ডাক্তারি থেকে শিল্পকর্ম, প্রশাসন চালানো থেকে সন্তান মানুষ করা— নারী নানা রূপে ধরা দেন। সেই সব রূপকেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে।’’
মণ্ডপে ঢুকলেই দেখা যাবে ১০ হাতের একটি মূর্তি। হাতে বই, গলায় স্টেথোস্কোপ, পরনে সাদা অ্যাপ্রন। মেয়েরা যে সব পারে সেটা দেখাতেই ১০ হাত দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন আয়োজকেরা। তবে এর সঙ্গে আরজি করের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানান পুজো কমিটির সহ-সভাপতি সোমনাথ ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন নারী তো চিকিৎসকও হতে পারেন। আসলে আমরা নারী শক্তির বন্দনা করেছি। প্রত্যেক নারীই তো উমার রূপ। সেই রূপকেই তুলে ধরা হয়েছে।’’ আয়োজকেরা যাই বলুক না কেন। মণ্ডপে আসা মানুষদের মতে, আরজি করের প্রতিবাদেই মণ্ডপসজ্জা করা হয়েছে।