লক্ষ্মীপল্লির মণ্ডপ (বাঁ দিকে)। তেঁতুলতলা রবীন্দ্র সঙ্ঘের পুজো। নিজস্ব চিত্র
হুগলি জেলায় উৎসবের ক্যালেন্ডারে জায়গা করে নিয়েছে রিষড়ার জগদ্ধাত্রী পুজোও। চন্দননগরে পুজো শেষ হতেই মানুষের ঢল নেমেছে এখানে। পুজো শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। চলবে আজ, শনিবার পর্যন্ত। রবিবার শোভাযাত্রা-সহকারে বিসর্জন।
গঙ্গাপাড়ের এই শহরে বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা শ’দেড়েক। গত দু’বছর করোনার ধাক্কায় নমো নমো করে পুজোর পরে এ বার ফের থিমের ছড়াছড়ি। রেল লাইনের পূর্ব দিকে এন কে ব্যানার্জি স্ট্রিট, বিবেকানন্দ রোড, পিটি লাহা স্ট্রিট, জিটি রোড, টিসি মুখার্জি স্ট্রিট আলোয় সেজেছে। পশ্চিমে কে সি সেন রোড ধরে কার্ল মার্ক্স সরণি, শরৎ সরণি বা দাসপাড়া লেনও আলোয় ভেসে যাচ্ছে।
চারবাতি ইয়ং স্টাফের পুজো ৫২ বছরে পড়েছে। ওড়িশার প্রান্তিক এক এলাকার একটি মন্দির মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মণ্ডপসজ্জায় দড়ি, সুতো, চুমকির ব্যবহার। প্রতিমার সাজ সাবেকি, জানালেন পুজো কমিটির কর্মকর্তা সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়। পার্ক তরুণ দলের পুজোর বয়স ৫১ বছর। মণ্ডপ প্যারিসের একটি প্রাসাদের আদলে। মণ্ডপের আশপাশে কার্যত মেলা বসেছে। ভিড় ভালই হচ্ছে। পার্ক সম্মিলনীর পুজোয় থাকছে বাংলাদেশের নববর্ষের উৎসবের আঙ্গিক।
লেনিন মাঠ যুবগোষ্ঠীর মণ্ডপে আমদাবাদের বুদ্ধমন্দিরের আদল। হোগলা পাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পুজোকর্তারা জানাচ্ছেন, গত দু’বছর করোনা পরিস্থিতিতে সব আয়োজন কাটছাঁট করতে হয়েছিল। এ বার জাঁকজমক ফিরে এসেছে। মানুষের ভিড়ে আবহ জমজমাট।
বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টা তেঁতুলতলা রবীন্দ্র সঙ্ঘের পুজো ভাবনায়। এখানে আলোকসজ্জায় থাকছে ছোটদের মন ভাল করা কার্টুন। আলো এসেছে চন্দননগর থেকে। সূর্যশ্রীতেও আলোকসজ্জার বাহার। অনাথ আশ্রম, সারদামাতা ফরওয়ার্ড ক্লাব, জাগরণ, ইউথ অ্যাসোসিয়েশন, জাগৃতি, টি সি মুখার্জি স্ট্রিট, কালীতলা স্ট্রিটের পুজো দেখতেও ভিড় জমছে। তরুণ সমিতির প্রতিমা নজরকাড়া।
রেললাইনের পশ্চিম দিকে সাধনকানন অঙ্কুরের পুজো ভাবনায় তুলে ধরা হয়েছে বিশ্বের অর্থনৈতিক সঙ্কট। লক্ষ্মীপল্লিতে উঠে এসেছে জারোয়াদের জগৎ। মোড়পুকুর বটতলা, কোরাসের পুজোও নজর কাড়ছে।
পশ্চিমবঙ্গের নানা জেলা তথা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মুখোশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নিউ বর্ণালী চক্রের মণ্ডপ। পুজোর কর্তা অসিতাভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘মুখোশ তৈরির শিল্পী থেকে মুখোশ-নৃত্যের শিল্পীরা বিপন্ন। এই সব শিল্পের প্রসার ও প্রচার ঘটাতেই আমাদের এই ভাবনা।’’ বিভিন্ন প্রদেশের মুখোশ তৈরি ও নাচের তথ্যচিত্র দেখানোহচ্ছে মণ্ডপে।
চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, ভিড় সামাল দেওয়া এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র জানান, এলাকা সাফসুতরো করা থেকে জৈব শৌচাগারের পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করা হয়েছে।