Higher Secondary Exam 2024

অভাবকে সঙ্গী করেই মেধা তালিকায় দশম বৃষ্টি

বৃষ্টির বাবা সুশান্ত দত্ত আদতে তাঁতশিল্পী। তিনি জানান, তাঁতের কাপড়ের আর বিক্রি নেই তেমন। তাই তিনি এখন দড়ি তৈরি করে দিন গুজরান করেন।

Advertisement

দীপঙ্কর দে

চণ্ডীতলা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৪ ০৮:০৯
Share:

বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বৃষ্টি। নিজস্ব চিত্র।

সংসারে অভাব রয়েছে। বাবার দড়ি তৈরির রোজগারে প্রতিদিন ঠিক করে খাবার জোটে না। তবু এই অভাবকে সঙ্গী করেই কলা বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে সারা রাজ্যের মধ্যে দশম হয়েছে বেগমপুর বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী বৃষ্টি দত্ত।

Advertisement

মাধ্যমিকেও ভাল ফল ছিল তার। কলা বিভাগকে বেছে নিয়েছিল সে। বাংলা ও ইংরেজির সঙ্গে ছিল অর্থনীতি, ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও এডুকেশন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৭। বৃষ্টি ইংরেজি নিয়ে উচ্চশিক্ষা করতে চায়। ইচ্ছা আছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স করবে। তারপর এমএ। শিক্ষিকা হতে চায় সে। কিন্তু কতটা সাধ ও স্বপ্নপূরণ হবে, আশঙ্কায় বৃষ্টি।

বৃষ্টির বাবা সুশান্ত দত্ত আদতে তাঁতশিল্পী। তিনি জানান, তাঁতের কাপড়ের আর বিক্রি নেই তেমন। তাই তিনি এখন দড়ি তৈরি করে দিন গুজরান করেন। বৃষ্টির মা পম্পা সংসার সামলান। বৃষ্টির ভাই অনীক স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। সুশান্ত বলেন, ‘‘মেয়ে পড়তে ভালবাসে। তাই এলাকার চারজন পড়িয়ে গিয়েছেন। কখনও কখনও টাকা দিতে পারিনি। কিন্তু তাঁরা পড়ানো থামাননি। তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’

Advertisement

বৃষ্টি জানিয়ছে, সে নিজে দিনে প্রায় সাত ঘণ্টা পড়েছে। অবসরে সে টিভি দেখতে ভালবাসে। পছন্দ করে কবিতা-গান। বৃষ্টির কথায়, ‘‘মাধ্যমিক পর্যন্ত বাবার কাছে পড়তাম। বই কিনতে পারিনি। অন্যের থেকে বই এনে পড়েছি।’’ স্কুলের শিক্ষিকাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনি সে।

মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ কী ভাবে সামলাবেন, ভেবে আকুল সুশান্ত। তিনি বলেন, ‘‘মাসে ৬-৭ হাজার টাকা রোজগার। খাবারই ঠিক জোটে না। অভাবের কাছে মেয়েটা এ ভাবে হেরে যাবে, মানতে কষ্ট হয়।’’

তবে আশা ছাড়তে নারাজ বৃষ্টি। দৃঢ় স্বরে সে বলে, ‘‘অভাবকে সঙ্গী করে এতটা পথ এসেছি। প্রয়োজন হলে অভাবকে নিয়েই এগোব। তবে লড়াই থামাব না। সুদিন ঠিক আসবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement