হাওড়া পুরসভা। ফাইল চিত্র।
গঙ্গা থেকে প্রতিমার কাঠামো ও পুজোর ফুল-বেলপাতা তুলতে এ বছর একটি বেসরকারি সংস্থাকে কাজে লাগাল হাওড়া পুরসভা। পাশাপাশি, হাওড়ায় গঙ্গার ঘাটগুলিতে যাতে সুষ্ঠু ভাবে ভাসান হয়, তার জন্য প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করে কড়া নজরদারি চালায় পুরসভা ও হাওড়া সিটি পুলিশ। এ ছাড়া, গঙ্গা দূষণ-মুক্ত রাখতেও ছিল একাধিক ব্যবস্থা। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার দশমী থেকে আগামী তিন দিন বিসর্জনের প্রক্রিয়া চলবে। আগামী কয়েক দিনও যাতে সুষ্ঠু ভাবে প্রতিমার ভাসান হয়, তার জন্য পর্যাপ্ত আলো ও পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য বারের মতো এ বছরও উত্তর হাওড়ার বাঁধাঘাট, মধ্য হাওড়ার শিবপুর, রামকৃষ্ণপুর ঘাটের মতো আটটি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গঙ্গার ঘাটে প্রতিমা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুল, মালা, গয়না খুলে নিচ্ছেন পুরসভার সাফাইকর্মীরা। প্রতিটি ঘাটে প্রায় ৫০০ জন সাফাইকর্মী এই কাজ করছেন। এর পরে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ঘাটগুলিতে চেনপুলি রাখা হয়েছে। চেনপুলি দিয়ে প্রতিমার কাঠামোকে জলে ডুবিয়ে আবার তুলে নেওয়া হচ্ছে। একাদশীর ভোর থেকেই ট্রাকে করে কাঠামোগুলি গঙ্গার ঘাট থেকে দূরে বেলগাছিয়া ভাগাড়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে পুরসভা জানিয়েছে। তবে শিবপুর ঘাটে চেনপুলির পাশাপাশি প্রতিমা ভাসানের জন্য একটি ক্রেনের মতো একটি হাইড্রা মেশিনও রাখা হয়েছে।
পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘শিবপুর ঘাট ছাড়া অন্য ঘাটগুলিতে হাইড্রা মেশিন রাখার জায়গা নেই। তাই সেই ঘাটগুলিতে রাখা যায়নি। এ বছর একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়েই এই ভাসানের পুরো কাজটি করানো হচ্ছে। এ বার দরপত্র ডেকে ওই সংস্থাকে এই কাজ দেওয়া হয়েছে।’’
ওই পুরকর্তা জানান, গঙ্গা ছাড়াও হাওড়া পুর এলাকার ১৫টি পুকুরে ভাসান হচ্ছে। সে জন্য পুকুরগুলির চারধারে পুরসভার তরফে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে। পুকুরে প্রতিমা ভাসান হলে তা যাতে নির্বিঘ্নে হয়, সে ব্যাপারে সর্তক নজর রাখা হচ্ছে। অন্য দিকে, হাওড়া সিটি পুলিশের তরফেও সুষ্ঠু ভাবে যাতে ভাসান হয় এবং কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য দশমীর দিন থেকেই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ঘাটগুলিতে।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী বুধবার বলেন, ‘‘গঙ্গার ঘাটগুলিতে ভাসানের জন্য প্রায় ৮০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরা মূলত ঘাটগুলিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছেন। যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, তার উপরে নজর রাখছেন। এ ছাড়া, পাঁচটি বিপর্যয় মোকাবিলা দলকেও রাখা হয়েছে। এ দিনই হাওড়া শহরের মোট প্রতিমার প্রায় ৩০ শতাংশ ভাসান হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।’’ তিনি জানান, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ১৩৪৪টি পুজো হয়েছে।