প্রতীকী ছবি।
পুজোর ছুটিতে প্রতিষেধক দেওয়া বন্ধ রেখেছিল কলকাতা পুরসভা। তবে সেই পথে হাঁটেনি হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বরং পুজোর দিনগুলিতেই দেড় লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল তারা। বাস্তবে অবশ্য সেই লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে হাওড়া। সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুজোর দিনগুলিতে জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।
পুজোয় মণ্ডপে মণ্ডপে দেদার ভিড় জমালেও প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে কলকাতা। পরিসংখ্যান বলছে, পুজোয় সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত বিভিন্ন পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক প্রদান বন্ধ ছিল। তার পরে শনিবার, একাদশীর দিন ফের প্রতিষেক দেওয়া চালু হয়। রবিবার ফের বন্ধ ছিল প্রতিষেধক প্রদান কর্মসূচি। পরিসংখ্যান বলছে, সোমবার প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার মানুষকে প্রতিষেধক দিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
তবে এর উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে হাওড়ায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সপ্তমীর দিন সর্বত্র ছুটি থাকলেও অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মীরা জেলা জুড়ে প্রায় ৬৫ হাজার বাসিন্দাকে প্রতিষেধক দিয়েছেন। অষ্টমী, নবমী ও দশমীতেও প্রায় ৩৫ হাজার বাসিন্দাকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। পুজোর চার দিনই শুধু নয়, শনিবার একাদশীর দিন ৫০ হাজার, রবিবার ৩৮ হাজার ও সোমবার ৬২ হাজার ৮৫২ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘পুজোর ছুটির মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দাকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা ছাপিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ বাসিন্দাকে প্রতিষেধক দেওয়া গিয়েছে। হাওড়ায় প্রতিষেধক নিতে পারবেন, এমন ৩৫ লক্ষ বাসিন্দাদের মধ্যে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ২৫ লক্ষ বাসিন্দাকে প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় এবং ১০ লক্ষ বাসিন্দাকে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়ে গিয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, হাওড়ায় প্রতিষেধক দেওয়ার মাত্রা ঠিক থাকায় পুজোর দিনেও সংক্রমিতের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বাড়েনি। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এই ক’দিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৭০-এর আশপাশেই ছিল। এর মধ্যে সপ্তমীর দিন স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে দেখা গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৯। যা রবিবার, একাদশীর দিনে কমে হয়েছে ৩২। সোমবার তা আবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১-এ। সংক্রমণ যাতে আর কোনও ভাবেই না বাড়ে, তার জন্য চেষ্টা করছে জেলা প্রশাসন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, এখনই করোনা না বাড়লেও আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে কতটা বাড়ল, তার উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে করোনা পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। পুজোর সময়ে কলকাতার পাশাপাশি হাওড়ার মণ্ডপেও যে ভাবে ভিড় হয়েছে, তাতে ফের সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই সংক্রমণ রুখতে প্রতিষেধক দেওয়ার পাশাপাশি করোনা পরীক্ষার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে।