বেহাত অর্থের খোঁজে তদন্ত চলছেই
West Bengal Tab Scam

ট্যাবের টাকা ফের পডুয়াদের অ্যাকাউন্টে পাঠাচ্ছে প্রশাসন

ট্যাব কেনার টাকা পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না ঢুকে বেহাত হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের নানা জেলায় এমন ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়ারা বঞ্চিত হচ্ছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪২
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ট্যাব কেনার টাকা পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না ঢুকে বেহাত হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের নানা জেলায় এমন ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়ারা বঞ্চিত হচ্ছেন না। হুগলির সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের টাকা সোমবার তাঁদের অ্যাকাউন্টে ফের পাঠানো হয়েছে বলে জানাল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর।

Advertisement

ডিআই অর্থাৎ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সত্যজিৎ মণ্ডল সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘যাদের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল, তাদের সব টাকা ছেড়ে দেওয়া হয়ে গিয়েছে।’’ মোট কত পড়ুয়ার অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ হয়েছিল, তা অবশ্য জানাতে চাননি ওই আধিকারিক।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ৩৫টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চুঁচুড়ার পিপুলপাতিতে ডিআই কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল। তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট নম্বর-সহ ব্যাঙ্কের বিস্তারিত নথি নিয়ে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাকে দিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়।

Advertisement

আরামবাগের বড়ডোঙ্গল রমানাথ ইনস্টিটিউশনের টিচার ইনচার্জ পরেশ দুলে বলেন, ‘‘আমাদের ৪ পড়ুয়ার টাকা অন্যত্র চলে গিয়েছে। তাদের ব্যাঙ্কের বিস্তারিত নথি নিয়ে বলা হয়, আজই টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। কাল-পড়শু পড়ুয়ারা পেয়ে যাবে।’’ পুরশুড়ার কৈলাসচন্দ্র সাধুখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২, গোঘাটের বাঘারবার্ড হাই স্কুলের ৫, গোঘাটের বালি স্কুল ও ভগবতী গার্লস স্কুলের ১ জন করে পড়ুয়ার ব্যাঙ্কের তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। হ্যাকারদের থেকে টাকা উদ্ধারের অপেক্ষায় না থেকে বঞ্চিত পড়ুয়াদের টাকা দিয়ে দেওয়া ‘ভাল উদ্যোগ’ বলে মনে করছেন বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

হুগলিতে মোট কত স্কুলের, কত পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা গায়েব হয়েছে, সেই তথ্য সরকারি স্তরে মেলেনি। তবে, প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস’ সূত্রের দাবি, পঞ্চাশের বেশি স্কুলে অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাকিং’-সহ তিন ধরনের গোলমাল হয়েছে। সব মিলিয়ে এই সংখ্যা সংখ্যা ৫৩৯টি। হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের আইএফসি কোড, উপভোক্তার আ্যাকাউন্ট নম্বর বা নাম সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে।

ওই সূত্রটি মানছে, বাকিগুলির প্রায় ৯০ শতাংশই স্কুলের করণিক-ত্রুটির (ক্ল্যারিক্যাল মিসটেক) কারণে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমত, ব্যাঙ্কের আইএফসি কোড, উপভোক্তার নাম ঠিক থাকলেও অ্যকাউন্ট নম্বরে কোনও সংখ্যা ভুল হয়েছে। ওই পড়ুয়াদের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকেও ফিরে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত, স্কুল থেকে পাঠানো অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং আইএফসি কোডের সঙ্গে উপভোক্তার সম্পর্ক নেই। যেমন, আরামবাগ গার্লস স্কুলের এক ছাত্রী তাঁর ভাইয়ের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছিল। ফলে, তার টাকা ঢোকেনি।

ওই সংগঠনের রাজ্য সদস্য তথা আরামবাগের ডহরকুন্ডু শ্রীরামকৃষ্ণ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রণবকুমার নায়েক বলেন, ‘‘অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং প্রতিরোধে উন্নত সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা চাইছি আমরা। বাংলার শিক্ষা পোর্টালটি আরও সুরক্ষিত করা হোক। স্কুলের কাজও ত্রুটিমুক্ত রাখতে আমরা সচেষ্ট হচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement