সুসজ্জিত: মাহেশের জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। —ফাইল চিত্র।
আজ রথযাত্রা। রথে চেপে সখী পৌর্ণমাসির বাড়িতে যাবেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। সেই উপলক্ষ্যে সাজো সাজো রব হুগলির মাহেশ, গুপ্তিপাড়ায়। এ ছাড়াও বহু জায়গায় টান পড়বে রথের রশিতে।
মাহেশে রথযাত্রা উৎসবের বয়স এ বার হল ৬২৭ বছর। প্রথা অনুযায়ী স্নানযাত্রার দিন দুধ-গঙ্গাজলে স্নান করে তিন দেবতার জ্বর আসে। এক পক্ষ কাল মন্দির বন্ধ করে সেবা-শুশ্রূষা চলে ভগবানের। তার পরে রবিবার মন্দিরের দরজা খোলে। নবযৌবন উৎসব হয়। রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে সোমবার প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে।
পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, উৎসব সুষ্ঠু ভাবে পালন করতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হবে। জগন্নাথ মন্দিরের সামনে থেকে মাসির বাড়ি পর্যন্ত জিটি রোড ধরে যাত্রাপথে ভিড়ে নজরদারির জন্য পাঁচটির বেশি অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুলিশ নজরদারি চালাবে। পুলিশের নজর থাকবে বিভিন্ন বাড়ির ছাদের উপর থেকেও। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাসম্ভব নিশ্ছিদ্র করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিগত বছরের মতো সিসিটিভি থাকবে। তা ছাড়াও, এ বার বাইনোকুলারে পুলিশ চোখ রাখবে। যথেষ্ট সংখ্যায় মহিলা পুলিশও থাকবে। বেচাল দেখলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সকাল থেকেই জিটি রোডে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বহু মানুষ জলপথে মাহেশে আসেন রথ দেখতে। সেই কারণে গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে পুলিশ থাকবে। তৈরি থাকবে বিপর্যয় মোকাবিলা দল।
এ দিকে, দিন কয়েক আগে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে পৃথ্বীশ অধিকারী নামে এক সেবাইত অভিযোগ করেছেন, রথযাত্রার সময় পালার ইজারায় তাঁদের জোর করে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের তরফে পিয়াল অধিকারি এবং অসীম পণ্ডিত গুরুত্ব দেননি। বিষয়টি ‘আভ্যন্তরীণ’ জানিয়ে তাঁদের বক্তব্য, মন্দিরের নিয়ম না মানায় একটি নির্দিষ্ট পরিবারের কয়েক জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থানেওয়া হয়েছে। নিয়মের বাইরেকিছুই হয়নি।
হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, গুপ্তিপাড়ায়রথে নিরাপত্তার জন্য ডিএসপি পদমর্যাদার দশ জন আধিকারিক থাকবেন। সব মিলিয়ে পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার থাকবেন প্রায় এক হাজার। শ’দেড়েক সিসিটিভি ছাড়াও ড্রোনের নজরদারি থাকবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকে পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মীরা রাস্তায় থাকবেন।
চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারের রথ এ বার ২৮১ বছরে পড়ল। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ভিড় সামাল দিতে এসিপি, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার অফিসারদের নেতৃত্বে দু’শোর বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকবে।