গায়ে হাত দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে পালানোর চেষ্টা করেছিল মত্ত অবস্থায় থাকা দুই যুবক। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
স্বামীর সঙ্গে মোটরবাইকে চেপে অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন স্ত্রী। সেই সময়ে তাঁর গায়ে হাত দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে পালানোর চেষ্টা করেছিল মত্ত অবস্থায় থাকা দুই যুবক। তবে, তাদের তাড়া করে পরবর্তী ট্র্যাফিক সিগন্যালে ধরে ফেলেন ওই দম্পতি। মহিলার চিৎকারে পথচলতি লোকজন ছুটে এসে অভিযুক্তদের মারধর শুরু করেন। শেষে পুলিশ এসে ওই দুই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে গ্রেফতার করা হয় তাদের। ধৃতদের নাম পিন্টু যাদব ও সাহিল সিংহ ওরফে লাল। দু’জনেরই বাড়ি শিবপুর এলাকায়।
বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অফিস ও হাওড়া থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড মোড়ে। কার্যত পুলিশের নাকের ডগায় এমন ঘটনার পরে রাতে হাওড়া শহরের পথঘাট মহিলাদের জন্য কতটা নিরাপদ, উঠে গিয়েছে গুরুতর সেই প্রশ্ন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ৯টা নাগাদ স্বামীর সঙ্গে মোটরবাইকে কলকাতার অফিস থেকে হাওড়ার কদমতলার বাড়িতে ফিরছিলেন ওই মহিলা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা যখন হাওড়া স্টেশনের দিক দিয়ে বঙ্কিম সেতু ধরে জেলাশাসকের বাংলোর দিকে নামছেন, সেই সময়ে একটি মোটরবাইকে চেপে আসা দুই অভিযুক্ত যুবকের মধ্যে এক জন তাঁর পিঠে চাপড় মেরে তীব্র গতিতে বাইক চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।
ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমি ওদের চিনি না। এ ভাবে পিছন থেকে পিঠে চাপড় মারায় হকচকিয়ে যাই। আমার স্বামী ওই যুবকদের দাঁড়াতে বলেন। কিন্তু ওরা তো দাঁড়ায়নিই, উল্টে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তখন আমরা ওদের তাড়া করে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড মোড়ে ধরে ফেলি।’’
পুলিশ জানায়, ওই মহিলার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও স্থানীয় দোকানদারেরা
ছুটে আসেন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই অভিযুক্ত পিন্টু ও সাহিলকে বাইক থেকে নামিয়ে
মারতে শুরু করেন তাঁরা। কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ ছুটে এসে উত্তেজিত জনতাকে থামানোর চেষ্টা করলে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বেধে যায়।
মহিলার স্বামী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ঘটনাটি অন্য দিকে যাচ্ছে দেখে আমি ১০০ ডায়ালে ফোন করলে হাওড়া থানার পুলিশ দ্রুত চলে আসে। ওই দুই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় তারা। পরে আমরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এই ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে, তা দেখার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেছি।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে
গিয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঠিক কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’