বিপত্তি: হাওড়া আদালতের কাছে রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন এই দোকান থেকেই ছড়ায় আগুন। রবিবার রাতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
গভীর রাতে লাগা আগুনে ছাই হয়ে গেল হাওড়া আদালত লাগোয়া রেজিস্ট্রি অফিসের গা-ঘেঁষে থাকা পাঁচটি দোকান। আগুনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি রেজিস্ট্রি অফিসের একতলা ও দোতলার দু’টি ঘরও। পুড়ে গিয়েছে দোতলার ঘরে থাকা একটি ফোটোকপি মেশিন। তবে দমকলকর্মীদের তৎপরতায় অল্পের জন্য বাঁচানো গিয়েছে অফিসের দু’টি তলে স্তূপীকৃত হয়ে থাকা বহু ফাইল। যদিও আগুন নেভানোর সময়ে জলে ভিজে নষ্ট হয়েছে ফাইলে থাকা বহু নথিপত্র।
পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত পৌনে দুটো নাগাদ ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র রোডে রেজিস্ট্রি অফিস লাগোয়া পর পর পাঁচটি গুমটি দোকানে আগুন লাগে। তার মধ্যে দু’টি দোকান ছিল শরবতের, একটি আদালতের কাগজপত্র বিক্রির। এ ছাড়া ছিল আরও দু’টি দোকান। সোমবার ছিল মঙ্গলাহাট বসার দিন। সে কারণে রবিবার রাত থেকেই ওই চত্বরে আসতে শুরু করেছিলেন হাটের ব্যবসায়ীরা। তাঁরাই প্রথম আগুন দেখে দমকল ও পুলিশে খবর দেন। নিজেরাও আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। খবর পেয়ে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন আসে। ততক্ষণে আগুন রেজিস্ট্রি অফিসে ছড়িয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই অফিস বাঁচাতে দমকলকর্মীরা তালা ভেঙে ঢুকে জল দিতে শুরু করেন। তারই মধ্যে অফিসের দোতলার ঘরে থাকা একটি ফোটোকপি মেশিন পুড়ে যায়। জলে ভিজে ক্ষতি হয় প্রচুর ফাইলের।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে রাতেই ছুটে আসেন এলাকার প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি শৈলেশ রাই। তিনি বলেন, ‘‘তারের কুণ্ডলী, গুমটির বাঁশ, কাঠ আর ত্রিপলে ওই এলাকাটি জতুগৃহ হয়ে রয়েছে। মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা হাত না লাগালে আগুন আরও ভয়াবহ আকার নিত।’’
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন হাওড়া ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘রেজিস্ট্রি অফিসের যা ক্ষতি হয়েছে, তাতে আগামী কয়েক দিন ওই অফিসে কাজ বন্ধ রাখতে হবে। তবে মানুষের ভোগান্তি এড়াতে আমরা রেজিস্ট্রারকে অনুরোধ করেছি, এই অফিসের কাজ পুলিশ কমিশনারের অফিসের পাশে ডেপুটি রেজিস্ট্রারের অফিসের সঙ্গে আপাতত যুক্ত করতে।’’
প্রসঙ্গত, হাওড়া জেলার বাসিন্দাদের জমি, সম্পত্তি বা বাড়ির যাবতীয় নথি রয়েছে এই রেজিস্ট্রি অফিসেই। সেখানকার রেজিস্ট্রার সুকান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘দমকলের তৎপরতায় আগুনের গ্রাস থেকে অল্পের জন্য ফাইলপত্র বাঁচানো গিয়েছে। না হলে বড় ক্ষতি হয়ে যেত।’’ আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ও দমকল।