জখম বাঘরোলকে ঘিরে স্থানীয়রা। নিজস্ব চিত্র।
৬ নম্বর জাতীয় সড়ক পার হতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়ে রাস্তাতেই পড়েছিল একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘরোল। আর তাকে লাঠির খোঁচা মেরে, ঢিল ছুড়ে চলছিল উত্যক্ত করা। কেউ কেউ দিচ্ছিল বাঘরোলটিকে পিটিয়ে মারার নিদানও। বৃহস্পতিবার সকালে বাগনানের কপালিপাড়ার এই খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যান কয়েকজন পরিবেশপ্রেমী। তাঁরাই উদ্ধার করে বন দফতরের হাতে তুলে দেন।
বন দফতরের উলুবেড়িয়া রেঞ্জের অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাতে জাতীয় সড়ক পার হওয়ার সময় গাড়ির ধাক্কায় পূর্ণবয়স্ক বাঘরোলটির সামনের দু’টি পা গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে চিকিৎসার জন্য গড়চুমুক প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।’’
বন দফতরের কর্মীরা জানান, রাজ্য প্রাণী বাঘরোল একেবারেই হিংস্র নয়। মূলত মাছ এদের খাদ্য। হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার জলাজঙ্গলে এদের দেখা মেলে বেশি। শরীরে বাঘের মতো ডোরাকাটা দাগ থাকায় অনেকে একে বাঘরোল বলে। অনেক জায়গায় এটি মেছোবিড়াল নামেও পরিচিত। তবে নগরায়নের জেরে বন কমতে থাকায় বাসস্থানের সঙ্কটে পড়েছে এই প্রাণী। খাবারের খোঁজে প্রায়ই তারা হানা দিচ্ছে গৃহস্থ বাড়িতে। পাশাপাশি বাড়ছে বাঘরোলকে পিটিয়ে মারার প্রবণতা। বাঘরোল নিয়ে লাগাতার সচেতনতা প্রচার করা হচ্ছে বলেও দাবি বন দফতরের কর্মীদের।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী চন্দ্রনাথ বসুর কথায়, ‘‘নামের সঙ্গে বাঘ শব্দটি আছে বলেই যে সেটি বাঘ হবে, তার কি কোনও কারণ আছে? জল আর জলপাই কি এক? এ দিন ঘটনাস্থলে ঠিক সময়ে না এলে স্থানীয়রা বাঘরোলটিকে পিটিয়ে মেরেই ফেলত।’’
আর এক পরিবেশকর্মী চিত্রক প্রামাণিক বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ এই প্রাণী সম্পর্কে জানেন। টিভি, কাগজ সর্বত্র এই বাঘরোল নিয়ে আলোচনা চলে। ফলে বাঘরোল নিয়ে অযথা আতঙ্কের কারণ নেই। মানুষকেও একটু সচেতন হতে হবে।’’