এ ভাবেই জমছে আবর্জনা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
দ্বারকেশ্বর নদের চরে ভাগাড় করা নিয়ে আরামবাগ পুরসভার বিরুদ্ধে দূষণের অভিযোগ ছিলই। এ বার বর্ষার মরসুমে সে সব আবর্জনা বয়ে নিয়ে গিয়ে একেবারে নদের পাড়ের কাছে রাখা হচ্ছে। নদ ভরে উঠলেই সে সব ভাসবে বলে আশঙ্কা পরিবেশপ্রেমীদের। সেচ দফতরও সরব হয়েছে।
মহকুমা সেচ দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার দীনবন্ধু ঘোষ বলেন, “নদের খাতে আবর্জনা পড়ায় নিশ্চিত ভাবেই জলদূষণ হবে। আমাদের উদ্বেগের বিষয়টা পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অবিলম্বে যাবতীয় বর্জ্য সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।” একইসঙ্গে দীনবন্ধুবাবুর অভিযোগ, “শুধু পুর এলাকাই নয়, নদ বরাবর বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার আবর্জনা পড়ার জন্যেও নদ দূষিত হচ্ছে। পঞ্চায়েত কর্তাদেরও সচেতন করা হচ্ছে।”
পুরপ্রধান সমীর ভান্ডারী বলেন, “আমাদের আবর্জনা ফেলার জায়গা নিয়ে সমস্যা আছে ঠিকই তবে নদের গায়েই ফেলা হচ্ছে বলে জানা ছিল না। বিষয়টা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
পুরপ্রধান আরও জানান, চাঁদুরে পুরসভার কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রাজ্যস্তরে প্রকল্প পাঠানো আছে। এখনও অনুমোদন মেলেনি। মাঝে বেনেপুকুরে পুরসভার মাঠে বর্জ্য ফেলা হচ্ছিল। স্থানীয় মানুষের আপত্তিতে আর ফেলা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছুটা সমস্যা আছে।
পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে শহরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায় এবং পুরশুড়ার একটি পরিবেশ সংস্থার সদস্য বিপ্লব রায়ের অভিযোগ, নদনদী দূষণ নিয়ে প্রশাসনের বিন্দুমাত্র নজরদারি নেই। সচেতনতাও নেই। আরামবাগ মহকুমার সার্বিক চিত্র এটাই।
মহকুমার আরামবাগ পুরসভা ছাড়াও ৬টি ব্লকের ৬৩টি পঞ্চায়েতের ৫৭টিই নদনদী ঘেঁষা। মহকুমার মূল চারটি নদ-নদী দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়ণ ছাড়াও আছে প্রায় মজে যাওয়া আমোদর নদ এবং তারাজুলি খাল। পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলির বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা না থাকায় প্লাস্টিক, পলিথিন, থার্মোকল-সহ যাবতীয় আবর্জনা ওইসব নদ-নদী বা খালেই ফেলা হয়। সারা বছর বিভিন্ন প্রতিমা বিসর্জনের জেরে দূষণও কম নয়। অথচ, খাতায়-কলমে হুগলি জেলাকে ‘নির্মল’ ঘোষণা করা হয় ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর!