উলুবেড়িয়ার জগদীশপুরে নদীর জল যাতে গ্রামে না ঢুকতে পারে তার জন্য গ্রামবাসীরা বস্তাতে মাটি ভরে বাঁধ উঁচু করছেন। নিজস্ব চিত্র ।
আমপানের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে ‘ইয়াস’-এর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি ছিল বিস্তর। জেলা প্রশাসন থেকে পুরসভা বা পঞ্চায়েত— সর্বত্র খোলা হয়েছিল কন্ট্রোল রুম। তবে, বিক্ষিপ্ত কিছু ক্ষয়ক্ষতি বাদে হুগলিতে ‘ইয়াস’-এর তেমন প্রভাব পড়েনি।
বুধবার সকাল থেকে মাঝেমধ্যে হালকা বা মাঝারি বৃষ্টি হয় জেলায়। সঙ্গে হাওয়া থাকলেও তার গতি বেশি ছিল না। প্রশাসন সূত্রের খবর, সকালে আরমবাগ মহকুমার দু’-তিনটি জায়গায় বিদ্যুতের তারে গাছের ডাল পড়ে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হয়। যদিও দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করে দেওয়া হয়। মহকুমার ছ’টি ব্লক মিলিয়ে গোটা ২০ বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। কিছু ঝুপড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের মঙ্গলবার দুপুরেই নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছিল।
মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ জানান, যাঁদের বাড়ি মজবুত, তাঁদের অনেকেই ত্রাণশিবির থেকে ফিরে গিয়েছেন। যাঁদের বাড়ি কাঁচা, তাঁদের ত্রাণশিবিরে থেকে যেতে বলা হয়েছে। ডিভিসি’র ছাড়া জলে প্লাবিত হওয়া আশঙ্কা রয়েছে, এমন এলাকার বাসিন্দাদেরও ত্রাণশিবিরে থাকতে বলা হয়েছে।
জেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীদের ত্রাণশিবিরে সরিয়ে আনা হয়েছিল। অনেক শিবিরেই আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে প্রশাসন বা পঞ্চায়েতের তরফে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়েছে। সিজা-কামালপুরের একটি ত্রাণশিবিরে বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে রান্না করতে দেখা যায়।
এ দিন ভরা কটালে বালিখালের জল উপচে উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার অন্তর্গত মাখলায় নিচু এলাকায় ঢুকে পড়ে। মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) সম্রাট চক্রবর্তী এবং চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখে যান। শতাধিক পরিবারকে মাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ত্রাণশিবিরে সরিয়ে আনা হয়। স্থানীয় বিদায়ী কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে, ওঁরা সরকারি ব্যবস্থায় ত্রাণশিবিরে থাকবেন।’’ পুরসভার ১ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশে গঙ্গার জল ঢোকে। গঙ্গা লাগোয়া বেশ কয়েকটি বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তরপাড়ার পুর-প্রশাসক দিলীপ যাদব ওই এলাকায় যান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আগেই মানুষকে সতর্ক করেছিলাম। অনেকে বাড়ি ছেড়ে যেতে চাননি। বেশ কিছু লোককে ভদ্রকালী উচ্চ বিদ্যালয়ে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’