বর্ষায় জলমগ্ন ব্যান্ডেলের গলাপুল। ফাইল চিত্র।
একটু বেশি বৃষ্টি হলেই ব্যান্ডেল স্টেশনের সাবওয়েতে হাঁটুজল জল জমে যাওয়ার সমস্যা দীর্ঘদিনের। বর্ষাকালে ওই সাবওয়ে ব্যবহার কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। এ ছাড়াও প্রায় সারা বছরই এখানে কমবেশি জল জমে থাকে। স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে এ বার ওই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হল পূর্ব রেল।
গত ১০ জুন পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার, হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায়, হুগলি সদরের মহকুমাশাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র (কেএমডিএ) আধিকারিকেরা মিলিত ভাবে সাবওয়েটি পরিদর্শন করেন। তারপরে এ নিয়ে বৈঠকে বর্ষার আগে স্থানীয় একাধিক নিকাশি পরিষ্কার করার কথা ভাবা হয়েছে বলে রেল ও প্রশাসন সূত্রের খবর।
সকলের নজর মূলত রসভরা খালের দিকে। সাবওয়ে সংলগ্ন এলাকা থেকে খালটি ব্যান্ডেল মোড় হয়ে গঙ্গায় গিয়ে মিশেছে। সাবওয়ে সংলগ্ন এলাকাটি পড়ে ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতে। খালের বাকি অংশ হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার আওতায়। মহকুমাশাসক জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। পুরসভা ও পঞ্চায়েত নিজেদের সামর্থ্যের কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি, সাবওয়ে সংলগ্ন খালের উপরে জাল দেওয়ার একটি প্রস্তাবও রেলকে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওরা (রেল) কী বলে, সেটা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী জানান, ব্যান্ডেল স্টেশন সংলগ্ন
রসভরা খালটি গঙ্গায় এসে মিশেছে। ব্যান্ডেল মোড় থেকে গঙ্গা পার পর্যন্ত ওই খালের অংশ পুরসভা নিয়ম মেনেই পরিষ্কার করে। তার আগের অংশ পড়ে পঞ্চায়েতে। তিনি বলেন, ‘‘এরপরেও রেল যদি বড় আকারে সংস্কারের উদ্যোগী হয়, আমরা সহযোগিতা করব।’’ ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের প্রধান ইন্দু পাসোয়ান জানান, পঞ্চায়েতের স্বল্প সামর্থ্যের কথা রেলকে জানানো হয়েছে। তাই পঞ্চায়েতের অংশে রেলকেই সংস্কারের দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে।
রেল সূত্রের খবর, বৈঠকে স্থির হয়, পুর এলাকায় থাকা একাধিক বড় নিকাশি নালা (হাইড্রেন) দ্রুত পুরসভার উদ্যোগে পরিষ্কার করা হবে। ব্যান্ডেল পঞ্চায়েত এবং রেলের এলাকায় থাকা নিকাশি নালা রেল পরিষ্কার করবে। পঞ্চায়েতের নিজস্ব রসদ না থাকায় ওই কাজও রেল করে দেবে। পরে ওই সব নিকাশি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পঞ্চায়েত করবে। এ ছাড়াও পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন নিকাশির উপরে জাল বসানোর ব্যবস্থা রেল করবে। যাতে প্লাস্টিক পড়ে নালা বুজে না যায়। রেলের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
সম্প্রতি ব্যান্ডেল স্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে। গোটা স্টেশন চত্বর আমূল পরিবর্তন হওয়ার কথা। তাই এ বার ওই সাবওয়ে নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হচ্ছে রেলকে। রেলের দাবি, স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে রসভরা খাল সঠিক ভাবে সংস্কার করা হলে সাবওয়েতে জল জমবে না।
বছর কয়েক আগে যাত্রীদের জন্য ব্যান্ডেল স্টেশনে একটি ওভারব্রিজ করে রেল। কিন্তু জিটি রোড থেকে স্টেশন রোড ধরে দেবানন্দপুর কিংবা দিল্লি রোড যাওয়ার জন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা হয়নি। ভরসা ওই সাবওয়েতেই।