জলমগ্ন চুঁচুড়া স্টেশন রোড। সোমবার সকালে। ছবি: তাপস ঘোষ
কোথাও ইতিমধ্যে হাঁটু জল জমেছে, কোথাও জল কোমরসমান।
কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এ চিত্র হুগলির জেলাসদর চুঁচুড়ার। শহরের ধরমপুর, ইঞ্জিনিয়ারবাগান, পিরতলা, পেয়ারাবাগান, পিপুলপাতি, পাঠকবাগান, পাঙ্কাটুলি, কৈলাসনগর, কাবেরীপাড়া রোড-সহ বেশিরভাগ এলাকা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। এমনকি, দমকল কেন্দ্রও জলে ভাসছে। ওই সব এলাকার বহু পুকুর-নালা উপচে গিয়েছে। নোংরা জল ঢুকছে বাড়িতে। চুঁচুড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকাতেও জল জমেছে।
নোংরা জলের মধ্যে দিয়েই চলছে যাতায়াত। জলবন্দি এলাকাগুলির বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত সংস্কার না-হওয়াতেই এই পরিস্থিতি। এখনই তাঁদের নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। বর্ষা পুরোদমে শুরু হলে কী হবে, সে কথা ভেবে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সমস্যা মেটানোর দাবিতে ইতিমধ্যেই তাঁরা পুরসভা, জেলা প্রশাসন এবং বিধায়কের কাছে দরবার করেছেন।
সোমবার সকালে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠকবাগান এলাকা-সহ বেশ কিছু জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। বিধায়ককে সামনে পেয়ে তাঁদের যন্ত্রণার কথা জানান এলাকাবাসী। পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের চেষ্টার আশ্বাস দেন বিধায়ক।
পুরপ্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেশ কিছু এলাকা সাময়িক জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকার কিছু ব্যক্তি-মালিকানাধীন পুকুর ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই জল উপচে রাস্তায় চলে আসায় এই বিপত্তি। পুরসভার পক্ষ থেকে জল নিকাশির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
পুরপ্রশাসক শুধু ব্যক্তি-মালিকানাধীন পুকুরের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের কথা বললেও ভুক্তভোগীদের অনেকেরই দাবি, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নির্মীয়মাণ আবাসনের দাপটে নিকাশি নালাগুলি ভেঙে বেহাল দশায় পরিণত হতে বসেছে। তাই নালা জল ধারণ করতে পারছে না। এলাকা জলমগ্ন হওয়ার পিছনে সেটাও একটা কারণ।
পাঠকবাগান এলাকার বাসিন্দা শ্রাবন্তী মজুমদার বলেন, ‘‘কয়েক দিনের বৃষ্টিতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি জলমগ্ন। নোংরা জল মাড়িয়ে যাতায়াত করা দুষ্কর হয়ে পড়ছে। নিকাশি নালাটি ঠিকমতো পরিষ্কার করা হলে হয়তো এই অবস্থা হতো না। জানানো সত্ত্বেও পুরসভা কিছুই করছে না।’’
একই রকম ক্ষোভ শোনা যাচ্ছে অনেক এলাকাতেই।