বিধিভঙ্গের অভিযোগে পুলিশি বাধার সন্মুখীন দিলীপ ঘোষ। ছবি: তাপস ঘোষ
কোভিড-বিধি উড়িয়ে, বৈধ অনুমতি ছাড়া জমায়েতের অভিযোগ নিয়ে হুগলির চন্দননগরে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়ালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সহাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার চন্দননগর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে গোন্দলপাড়া জুটমিল সংলগ্ন শ্রমিক আবাসনের মাঠের ঘটনা।
১২ ফেব্রুয়ারি চন্দননগরে পুরভোট। তার প্রচারেই শনিবার থেকে একাধিক কর্মসূচি নিয়ে শহরে ছিলেন দিলীপবাবু। রবিবার গোন্দলপাড়া জুটমিল গেটে পথসভা করার আগে তিনি পৌঁছন শ্রমিক আবাসনের মাঠে। সেখানে টিভি বসিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল দলীয় উদ্যোগে। বেলা ১২টা নাগাদ মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের পরে অনুষ্ঠান দেখছিলেন দিলীপবাবু। শতাধিক লোকের ভিড় ছিল সেখানে। তাতেই বাদ সাধে পুলিশ।
ভিড় দেখে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মীদের কাছে অনুষ্ঠানের অনুমতিপত্র দেখতে চান পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশের দাবি, বিজেপি নেতৃত্ব তা দেখাতে পারেননি। এরপরই অনুষ্ঠানস্থল ফাঁকা করার জন্য দিলীপবাবুকে অনুরোধ জানান চন্দননগরের আইসি সৌমেন পাল। দিলীপবাবু রাজি হননি। উল্টে, ওই পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে তর্ক জোড়েন তিনি। আইসি-কে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘এটা নির্বাচনী প্রচার নয়। তা হলে কেন নির্বাচনের বিধিভঙ্গ হবে? শুধু আমাদেরই ভিড় হয়? তৃণমূলের কর্মসূচিতে ভিড় দেখতে পায় না পুলিশ।’’
বচসা ঘিরে উত্তেজনা বাড়লে ডিসি (চন্দননগর) বিদিত রাজ বুন্দেশ এবং এসিপি (২) বাপ্পাদিত্য আরও বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই জুটমিল গেটের সভা বাতিল করে বর্ধমানের উদ্দেশে বেরিয়ে যান দিলীপবাবু। ফাঁকা হয়ে যায় মাঠ। সংবাদমাধ্যমকে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের ইশারায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুলিশ আমাদের কর্মসূচি ভণ্ডুল
করতে চাইছে।’’
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার বলেন, ‘‘হাতেগোনা লোক নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। দিলীপবাবুকে সামনে পেয়ে অনেকে হাজির হচ্ছিলেন। তবে ভিড় হয়নি।’’ দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বলেন, ‘‘দিলীপদা শুধু নন, যেখানেই যাচ্ছি, আমাকেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ শুধু বিজেপির জন্যই করোনা বিধি প্রয়োগ করে।’’
কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কোনও অনুমতি ছাড়াই ওই অনুষ্ঠান হচ্ছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের বিধি তৃণমূল মেনে প্রচার করছে। বিজেপি মানছে না বলেই হয়তো পুলিশ বাধা দিয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূলের কোনও বিষয় নেই। এটা কমিশন এবং প্রশাসনের ব্যাপার।’’