জগৎবল্লভপুর মাজু মাড়ঘুরালিতে একটি ক্লাবের রক্তদান শিবিরে মানা হল না করোনাবিধি।
মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে হাওড়া জেলায় দৈনিক করোনা সংক্রমণ কমে গেল প্রায় ১১০০।
গত ১১ জানুয়ারি যেখানে দৈনিক সংক্রমণ ছিল ১৮১৫, সেখানে ১৬ জানুয়ারি সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮৪-তে। কমেছে সংক্রমণের হারও (পজ়িটিভিটি রেট)।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ আগেও সংক্রমণের হার ছিল ৩০ শতাংশ। ১৬ জানুয়ারি তা হয়েছে ২০ শতাংশ। সংক্রমণ কমলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, বিধি মানার ক্ষেত্রে কোনও শিথিলতা দেখানো যাবে না।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, দৈনিক সংক্রমণ শূন্যে নামানো। শুধু তা-ই নয়, তা যাতে ফের না বাড়ে তা সুনিশ্চিত করা। সেটা করতে হলে করোনা
বিধি কঠোর ভাবে মানতে হবে। মাস্ক পরতে হবে।’’
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তাও জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা কঠোর ভাবে মানা হচ্ছে কি না, দেখে নেওয়া হবে। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।
তবেই জেলায় সংক্রমণ কমার যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তার দীর্ঘমেয়াদি সুফল দেখা দেবে।’’
জেলায় গত পাঁচদিন ধরেই দৈনিক সংক্রমণ কমছে। তবে, মৃত্যুর হার আবার এই সময়কালের মধ্যে কিছুটা বেশি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, গত বছর এই সময়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ে যে সব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, তার সঙ্গে এ বারে ফারাক আছে। গতবারে সরাসরি করোনার কারণে অনেকের মৃত্যু হয়েছিল। এ বারে তা হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘এ বারে যাঁরা মারা গিয়েছেন, সিংহভাগই বয়স এবং কো-মর্বিডিটির কারণে। তবে অসুস্থতার সময়ে তাঁদের যেহেতু করোনার সংক্রমণ ছিল, তাই এগুলিকে করোনা-মৃত্যু হিসেবেই তালিকাভুক্ত করতে হয়েছে। সরাসরি করোনার জন্য ফুসফুসে সংক্রমণ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এ বারে ঘটেনি বললেই চলে।’’
হাওড়া জেলা ঘনবসতিপূর্ণ। বিশেষ করে শহর এলাকার জনবসতির ঘনত্ব অনেক বেশি। শুধু তা-ই নয়, অন্য জেলা বা রাজ্য থেকে এই জেলায় মানুষের আনাগোনাও তুলনামূলক বেশি। ফলে, একটা সময়ে জেলায় সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়তে থাকে। তারপরেই সংক্রমণে রাশ টেনে ধরতে একাধিক ব্যবস্থা নেয় জেলা প্রশাসন। বহু এলাকাকে ‘মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োন’ বলে ঘোষণা করা হয়। মাস্ক পরার আবেদন জানিয়ে পথে নামে পুলিশ। স্থানীয় ভাবে হাট-বাজার বন্ধ ও খোলার সময় নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জেলায় চড়ুইভাতি, মেলা প্রভৃতিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, এ সবের জেরেই সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমছে।