বিপজ্জনক: এ ভাবেই রেল লাইন পেরিয়ে চলে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র
গত ৩০ ডিসেম্বর ট্রেনের ধাক্কায় তরতাজা এক যুবকের প্রাণ গিয়েছিল। তারপরে শ্রীরামপুর স্টেশনের উত্তর দিকের রেললাইন পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে ওঠানামার সময় ট্রেনে দুর্ঘটনা এড়াতে নজরদারি শুরু করল রেল পুলিশ। তবে, সর্বক্ষণ নয়, শুধুমাত্র সকাল-সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে নজরদারির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালের পয়লা জানুয়ারি ট্রেনের ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যুর জেরে হইচইয়ের জেরে সে বারেও এই ভাবে রেল পুলিশের নজরদারি শুরু হয়েছিল। কয়েক দিন পরেই তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, এ বারেও নজরদারি কত দিন চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
শেওড়াফুলি জিআরপি থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের পর্যাপ্ত কর্মী নেই। তাই, সব সময়ের জন্য পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব নয়। সকাল ও সন্ধ্যায় এক জন কনস্টেবল ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হচ্ছে। ট্রেন ঢোকার সময় তাঁরা মানুষজনকে সতর্ক করে দিচ্ছেন। প্ল্যাটফর্মের মাইকে প্রচার করেও মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। পোস্টার লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মানুষকেও আরও বেশি সচেতন হতে হবে। মোবাইল ফোন কানে নিয়ে বা তাতে চোখ রেখে কেউ যেন লাইন পারাপার না করেন। এতে বিপদ ডেকে আনা হয়।’’
শ্রীরামপুর একটি ব্যস্ত স্টেশন। দৈনিক কয়েক হাজার মানুষ এখান থেকে ট্রেন ধরেন। টিকিট কাউন্টার লাগোয়া জায়গায় সাবওয়ে রয়েছে। স্টেশনের উত্তর দিকে সাবওয়ে নেই। গোটা স্টেশনে ফুট ওভারব্রিজও নেই। ফলে, উত্তর দিকে বহু মানুষ রেল লাইন পেরিয়েই প্ল্যাটফর্মে ওঠানামা করেন। এ ভাবে পারাপার করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু বা আহত হওয়ার ঘটনা কম নেই। সহযাত্রী বা স্থানীয়েরা সতর্ক করায় অনেকে প্রাণে বাঁচেন। ওই অংশে সাবওয়ের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১০ সালে ওই প্রকল্প অনুমোদিত হলেও কাজের কাজ হয়নি।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টিউশন পড়তে যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরতে প্ল্যাটফর্মে ওঠার মুখে ট্রেনের ধাক্কায় এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার জেরে ফের ওই অংশে সাবওয়ে না থাকার বিষয়টি সামনে আসে। রেলের তরফে নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এর পরেই রবিবার, পয়লা জানুয়ারি থেকে রেল পুলিশের তরফে নজরদারি শুরু হয়েছে।
সাধারণ মানুষ চান, ওই অংশে সাবওয়ে হোক। তা হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকবে না। রেল অবশ্য আশা দেখাতে পারেনি। তারা জানিয়েছে, চলতি বাজেটে শ্রীরামপুরে সাবওয়ের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ফলে, এখনই সাবওয়ে হওয়ার সম্ভাবনা যে নেই, তা স্পষ্ট। সাবওয়ের দাবিতে এক সময় যাত্রী সংগঠন দৌড়ঝাঁপ করলেও এখন তা কার্যতথেমে গিয়েছে।