সিপিএম সাজিয়ে মিছিলে যোগ দেওয়ানোর অভিযোগ হুগলির বামপন্থীদের। — নিজস্ব চিত্র।
হুগলিতে মিছিল করল সিপিএম। মঙ্গলবার পাঁজিপুকুর থেকে হারিট বাজার পর্যন্ত মিছিলে বিজেপির বিরোধিতা করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। সিপিএমের অভিযোগ, তাদের পতাকা খুলে বিজেপি কর্মীরাই মিছিলে হেঁটেছেন। এবং মিছিলে ‘সিপিএম যোগ দিয়েছে’ দাবি করে মিথ্যাচার করছে। তারই প্রতিবাদে পথে নামেন হুগলি জেলার বামপন্থী কর্মী, সমর্থকেরা।
আবাস বিতরণে বেনিয়মের অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর হুগলির দাদপুর থানা এলাকার পাঁজিপুকুরের হারিট গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি ছিল বিজেপির। সে দিন বিজেপির কর্মসূচিতে চোখে পড়ে লাল পতাকাও। বিজেপির মিছিলে লাল ঝান্ডার এমন খোলামেলা আত্মপ্রকাশ দেখে অবাক হন রাজ্যবাসী। সিপিএম এই ‘ছবি’ মানতে চায়নি। তাদের দাবি ছিল, বিজেপি রাস্তা থেকে সিপিএমের পতাকা খুলে নিয়ে এ সব করছে। গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যদিও বিজেপির দাবি ছিল, সিপিএমের কর্মীরা হতোদ্যম। কারণ তাঁরা নেতাদের দেখা পান না। সরকারি অবিচারের বিরোধিতা করতে তাই তাঁরা গেরুয়া পতাকার শরণাপন্ন হয়েছেন।
২৩ ডিসেম্বরের ওই ‘ঘটনা’র প্রতিবাদে পথে নেমে মিছিল করল সিপিএম। মঙ্গলবার, পাঁজিপুকুর থেকে মিছিল শুরু হয়। পোস্টারে লেখা, ‘‘লাল পতাকা চুরি করে মিছিল সাজানোর বিজেপির নোংরা চক্রান্তের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন।’’ হারিট বাজারে পথসভাও করে সিপিএম। তাতে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের হুগলি জেলা কমিটির সদস্য মিন্টু বেরা, ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সর্বভারতীয় নেত্রী বনা টুডু, পোলবা দাদপুর ব্লকের সিপিএম নেতা সৌমেন ঘোষ, পান্ডুয়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন, জসীমউদ্দিনের মতো নেতারা। জসীমউদ্দিন বলেন, ‘‘এটা বিজেপির জঘন্য চক্রান্ত। যাঁদের হাতে সিপিএমের পতাকা দেখা যাচ্ছে তাঁরা কেউ সিপিএমের লোক নন। তাঁদের পরিবারও কোনও দিন বামপন্থী রাজনীতি করেনি। এরই প্রতিবাদে আমরা থানায় অভিযোগও করেছি। ওঁরা প্রমাণ করুক সিপিএম করে ওঁরা।’’
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘সিপিএম এখন অতীত। মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বিজেপিকে পাশে নিয়ে। সেখানে যাঁরা ভাল মানুষ, তাঁরা বিজেপির সঙ্গে আসছে। সিপিএম দু’চার জন লোক নিয়ে পঞ্চায়েতে কিছু করতে পারবে না। যাঁরা বিজেপির সঙ্গে আসছে, তাঁরা নিজের ইচ্ছায় আসছেন। জোর করা বা চক্রান্তের কোনও বিষয় নেই।’’
দুই বিরোধী দলের এমন টানাটানি দেখে স্বভাবতই মুচকি হাসি শাসক তৃণমূলের মুখে।