প্রতীকী চিত্র।
অসুস্থ, শারীরিক ভাবে অক্ষম কিংবা শয্যাশায়ী, যাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রতিষেধক নিতে যেতে পারছেন না, এ বার তাঁদের চিহ্নিত করবেন হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের এই স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি বা করোনা রোগী আছেন কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার কাজ করেন। সকলের স্বাস্থ্যের খবর নেন। এ বার এই কর্মীরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে অক্ষম, অসুস্থ বা শয্যাশায়ী রোগী আছেন কি না, তা জেনে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরে জানাবেন।
পাশাপাশি, ৪৪ বছরের বেশি বয়সি নাগরিকেরা, যাঁরা এখনও প্রতিষেধক নিতে যেতে পারেননি, প্রতিটি ওয়ার্ডে এমন কত জন আছেন, সেই তালিকাও তৈরি করবেন এই স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই মতো বিভিন্ন ওয়ার্ড ধরে শিবির করা হবে।
হাওড়া পুরসভার একটি মোবাইল ভ্যান ইতিপূর্বেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। প্রবীণ, অসুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের পাশাপাশি তাঁদের আশপাশের বাসিন্দারাও সেই প্রতিষেধক নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। যেমন, একটি এলাকায় পাঁচ জন অসুস্থ ব্যক্তিকে প্রতিষেধক দিতে গেলে তাঁদের পাশাপাশি ৪৪ বছরের বেশি বয়সি আরও জনা চল্লিশেক বাসিন্দাকেও প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। এ ভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ঠিক কত জনকে মোবাইল ভ্যানের সাহায্যে প্রতিষেধক দেওয়া হবে, তারই একটি তালিকা তৈরি করতে চাইছে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই তালিকা হাতে থাকলে কোনও এলাকায় মোবাইল ভ্যান নিয়ে যাওয়ার আগে ঠিক কত ভায়াল প্রতিষেধক নিয়ে যেতে হবে, তা জেনে নেওয়া যাবে। সেই মতো প্রতিষেধক জোগাড় করার কাজটাও সহজ হয়। আর এই জন্যই এখন মাঠে নামানো হচ্ছে পুরসভার সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি অস্থায়ী চুক্তিবদ্ধ স্বাস্থ্যকর্মীকে।
গত সপ্তাহেই পুরসভা ‘হাত বাড়ালেই ভ্যাকসিন’ নামে একটি কর্মসূচির সূচনা করে পাড়ায় পাড়ায় মোবাইল ভ্যান নিয়ে গিয়ে প্রবীণ ও অসুস্থদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। হাওড়া শহরের ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডেই প্রাথমিক ভাবে এই কাজ শুরু হয়। সেই সঙ্গে ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সের যাঁরা এখনও প্রতিষেধক নিতে পারেননি, তাঁদেরও ওই মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে তা দেওয়া হয়। হাওড়া শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডেই ওই মোবাইল ভ্যান ঘুরবে বলে পুরকর্তারা জানিয়েছেন। এই ভ্যানের সাহায্যে ঠিক কত জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে, তারই একটি হিসেব করতে চাইছে পুরসভা। তালিকা তৈরির উদ্দেশ্যও সেটাই।
হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তথা বর্তমান প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মূলত অসুস্থ, অসহায় ব্যক্তি, যাঁরা বাইরে বেরিয়ে প্রতিষেধক নিতে পারেননি, তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী দিনে যাতে এই পরিষেবা আরও বেশি করে মানুষের দরজায় পৌঁছনো যায়, তারই
চেষ্টা চলছে।’’